‘হিযবুত তাওহীদ’ বাংলাদেশ ভিত্তিক একটি ভয়ংকর পথভ্রষ্ট ধর্মীয় সংগঠন। বাস, ট্রেন, লঞ্চসহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে এবং সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্পন্সর বিজ্ঞাপনের দ্বারা ছড়ানো হিযবুত তাওহীদ নামক সংগঠনের নানা প্রচারণা দৃষ্টি কেড়েছে সবার। বিগত কয়েক বছর ধরে এই সংগঠনটি ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলির ব্যাপারে নানামাত্রিক
আপত্তি এবং ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ তওহিদি জনতাকে ধর্মব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে অব্যাহতভাবে প্রোপাগান্ডা চালিয়ে
যাচ্ছে। সংখ্যায় স্বল্প হলেও সাধারণ পর্যায়ের এক শ্রেণির মানুষ তাদের এই প্রোপাগাণ্ডায় প্রভাবিত হয়ে বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন।
কোন কোন দল মুসলমান হয়ে গোমরাহ যেমন: আহলে কোরআন, আহলে হাদিস, বেরলভী ইত্যাদি। আবার কোন কোন
দল মুসলমানদের নাম ব্যবহার করে, মূলত তারা অমুসলিম। যেমন: শিয়া, কাদিয়ানী, হিযবুত তাওহীদ ইত্যাদি। তাদের
সকলের কার্যক্রম ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য সবার এক। আর তা হলো, মুসলমানদের তাহযীব-তামাদ্দুন, ঈমান ও আমল নষ্ট করা। এবং মুসলমানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করে ইসলামকে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করা। তারা বিদেশী প্রভুদের নির্দেশে এদেশে
কাজ করে যাচ্ছে। হেযবুত তাওহীদ নামের সংগঠনটি ও একই ধারায় চলমান। তাদের জানা থাকা দরকার পবিত্র কালামে
পাকে আল্লাহ তাআলা বলেছেন- অর্থ: কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেছেন বস্তুতঃ
আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম কুশলী। (সুরা আলে ইমরান : ৫৪)
কারা এই ‘হিযবুত তাওহীদ’?
সংগঠনটির ওয়েব সাইট ঘেঁটে দেখা গেছে ১৯৯৫ সালে টাঙ্গাইলের করটিয়ার গ্রামের পন্নী পরিবারের সন্তান মোহাম্মাদ
বায়জিদ খান পন্নী (১৯২৫-২০১২ খ্রি.) দলটির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন রাজনীতিক, শিকারী ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক।
প্রথম যৌবনে তিনি এনায়াতুল্লাহ মাশরেক্বী (১৮৮৮-১৯৬৩ খ্রি.)-এর বৃটিশবিরোধী ‘খাকসার’ আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে রাজনৈতিক সংস্রব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিরিবিলি জীবন-যাপন শুরু করেন। এক সময় তার ধারণা হয় যে, বর্তমান ইসলাম বিকৃত ইসলাম। এজন্য তিনি মানুষকে ‘প্রকৃত ইসলাম’-এর পথ দেখাতে দলটির সূচনা করেন। বর্তমান যুগে পোনে
দু‘শ কোটি মুসলমানের মধ্যে কেবল তার অনুসারী পাঁচ লক্ষ মানুষকে তিনি ‘প্রকৃত মুসলমান’ মনে করেন (ইসলামের
প্রকৃত রূপরেখা, পৃ. ১১)। তিনি নিজেকে এই যুগের ইমাম বা ইমামুয্যামান হিসাবে দাবী করেন। এই দলের অনুসারীদের
বিশ্বাস হল, বায়জিদ খান পন্নীকে আল্লাহ বর্তমান যুগে সমগ্র মানবজাতির ত্রাতা হিসাবে পাঠিয়েছেন (হিজবুত তওহীদের গঠনতন্ত্র, পৃ. ১৩)।
অথচ ‘মোজেজা’ কেবল মাত্র নবি-রাসুলগণের জন্যই বিশেষায়িত, নবি-রাসুলের বাইরের কারও সঙ্গে যেটা ঘটে তাকে
কারামাত বলা হয়। এবং সেটা কেবল ধর্মীয় গুণাগুণে ঋদ্ধ আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত বান্দাদের বেলায়ই ঘটে। বায়জীদ খান
পন্নীর বাহ্যিক সুরত এবং জীবনযাপন যার সম্পূর্ণ বিপরীত ছিল। তাছাড়া মহানবি সা. এর ওফাতের মাধ্যমে ওহীর দরজা
চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে, আর কেউ আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সরাসরি কোনো বার্তাপ্রাপ্ত হবেন না।
২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি বায়জীদ খান পন্নী কথিত এ এমামুযযামানের মৃত্যু হয়। তাঁর পরে ‘হেযবুত তাওহীদের ‘এমাম’
হিসেবে দায়িত্বে আসেন, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলার পোরকরা গ্রামের হোসাইন মোহাম্মদ সেলিম। ১৯৭২ সালে
জন্ম। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘বিসিএস’ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেওয়ার দাবি করলেও অ্যাকাডেমিক ধর্মীয়
কোনো পড়াশোনা তাঁর নেই।
তিনি একজন মুদি দোকানি ছিলেন। মুদি দোকানের ব্যবসা থেকে বছর কয়েকের ব্যবধানে কীভাবে তিনি ‘হকপন্থী’
‘একমাত্র’ ধর্মীয় সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতা হয়ে উঠলেন, তা খুবই রহস্যজনক। ধর্মীয় নেতা হয়েও ক্ষ্যান্ত হননি, ২০১২-এর
পর থেকে ধর্মীয় ব্যাপারে নানা ধরনের ‘ফতোয়া’ জারি করছেন তাঁর ভক্তদের মধ্যে এবং ওলামায়ে কেরামকে ধর্মব্যবসায়ী, জঙ্গিবাদী ইত্যাদি নানা অপবাদে জর্জরিত করে অব্যাহতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন।
হিযবুত তাওহীদ এর আকীদা-বিশ্বাস:
তাদের মতে, রাসূল (সা.)-এর মৃত্যুর একশত বছরের মধ্যেই ইসলাম বিকৃত হয়ে যায়। অতঃপর দীর্ঘ তেরশ বছর এই
উম্মাহকে হিযবুত তওহীদের পবিত্র কর্মসূচি থেকে মাহরুম, বঞ্চিত রাখার পর আল্লাহ তাঁর অসীম করুণায় তাঁর দেয়া
কর্মসূচির পরিচয় ইমামুয্যামানকে বোঝার তাওফীক দিয়েছেন (ঐ, পৃ. ৬৯, ৭১)।
তারা অন্য মুসলমানদের সাথে ছালাত আদায় করে না এবং তাদের সাথে কোন ইবাদতেও অংশগ্রহণ করে না। এই দলে যারা
যুক্ত হবে তাদের শপথবাক্যে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই দলভুক্ত যারা নয় অর্থাৎ বাকি দুনিয়ার সমস্ত মুসলমান পথভ্রষ্ট ও
বিকৃত ইসলামের অনুসারী। অতএব তাদের সাথে কোন ইবাদতে অংশগ্রহণ করা যাবে না। কেবল এই আন্দোলনের সাথে
যুক্তদের সাথেই ইবাদতে অংশগ্রহণ করা যাবে (ঐ, পৃ. ৭৩)। এই দলটি আলেম-ওলামার প্রতি চূড়ান্ত বিদ্বেষ পোষণ করে
এবং তারা মনে করে যে, হাদীছ, তাফসীর, ফিকহসহ ইসলামী জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা-প্রশাখা কেবল অপ্রয়োজনীয়ই
নয়; বরং মুসলিম উম্মাহর বিভক্তির কারণ (ঐ, পৃ. ১৩; আকিদা, পৃ. ২৩)।
তারা মনে করে যে, আল্লাহ ‘হিযবুত তওহীদ’কেই মানবজাতির উদ্ধারকর্তা হিসাবে মনোনীত করেছেন। কাজেই এই সময়ে
যারা মুমিন-মুসলিম হতে চায়, আল্লাহর সঠিক দিক-নির্দেশনা, সত্যপথ লাভ করতে চায় তাদের এমামুযযামানের আনুগত্য
করা ছাড়া মুক্তি নেই। ‘হেযবুত তওহীদে’র মাধ্যমে গোটা বিশ্বে প্রকৃত ধর্ম প্রচার হবে। এটা আল্লাহরই নির্দেশ (http://www.hezbuttawheed.org)।
পন্নী আল্লাহর পক্ষ থেকে মুজেযা প্রাপ্তির দাবী করে প্রকারান্তরে নিজেকে নবী দাবী করেছেন। যেমন তিনি নিজের একটি ১০ মিনিটের ভাষণকে আল্লাহর মুজেযা হিসাবে দাবী করেন এবং প্রচার করেন যে, এই মুজেযার মাধ্যমে আল্লাহ তাকে এবং
হিযবুত তওহীদকে হক হিসাবে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এর চেয়ে বড় রহমত আর কি হতে পারে? যে মোজেযা তিনি নবীদের সময় ঘটাতেন একটা একটা করে, এখন তিনি নিজে এক সাথে ৮টা মোজেযা ১০ মিনিটের মধ্যে ঘটিয়ে দিলেন’
(আল্লাহ মো’জেজা হিজবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ৬৯)।
হিযবুত তওহীদ নেতার ভন্ডামী:
তাদের গঠনতন্ত্রে লেখা হয়েছে, ‘হিযবুত তওহীদে’র সবচেয়ে বড় মাইলফলক হচ্ছে, ২রা ফেব্রুয়ারী ২০০৮ তারিখে মহান
আল্লাহ এক মহান মো‘জেযা সংঘটন করেন যার দ্বারা তিনি তিনটি বিষয় সত্যায়ন করেন। যথা : হেযবুত তওহীদ হক (সত্য),
এর ইমাম আল্লাহর মনোনীত হক ইমাম, হিযবুত তওহীদের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে আল্লাহর সত্য দীন প্রতিষ্ঠিত হবে’। শুধু
তাই নয় তারা এই ভাষণটিকে কুরআনের মর্যাদা দিয়ে বলে, ‘কোরআন ও ইমামের এই ভাষণটি একই পর্যায়ভুক্ত। যারা
বায়জিদ খান পন্নীর উপর আল্লাহ প্রদত্ত এই মোজেযায় বিশ্বাস করবে না এবং এতে সন্দেহ রাখবে, তারা কুরআনকে
অবিশ্বাস করার মত অপরাধী এবং তাদের জন্য উভয় জাহানে রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি’ (গঠনতন্ত্র, পৃ. ১৬; আল্লাহ মো’জেজা হিজবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ১১-১৭, ৩৩, ৯৩; মহাসত্যের আহবান, পৃ. ২৬-২৭)।
তাদের মতে, হাদীছে বর্ণিত দাজ্জাল কোন প্রাণী নয়, বরং দাজ্জাল হল ‘ইহুদী-খৃষ্টান সভ্যতা’। আধুনিক যুগে ইমামুয্যামান
তথা পন্নী প্রথম এই দাজ্জালকে চিহ্নিত করেছেন এবং তিনি প্রমাণ করেছেন যে, পাশ্চাত্য বস্ত্তবাদী ইহুদী-খৃষ্টান যান্ত্রিক সভ্যতাই হচ্ছে সেই দাজ্জাল, যেই দানব ৪৮১ বছর আগেই জন্ম নিয়ে তার শৈশব-কৈশোর পার হয়ে বর্তমানে যৌবনে
উপনীত হয়েছে এবং দোর্দন্ড প্রতাপে সারা পৃথিবীকে পদদলিত করে চলেছে। আজ মুসলিমসহ সমস্ত পৃথিবী অর্থাৎ
মানবজাতি তাকে প্রভূ বলে মেনে নিয়ে তার পায়ে সিজদায় পড়ে আছে (দাজ্জাল? ইহুদি-খ্রিষ্টান ‘সভ্যতা’!, পৃ. ৫;
মহাসত্যের আহবান, পৃ. ১৩)।
তারা নিজ দলের সদস্যদেরকে শেষ যামানায় দাজ্জালের বিরুদ্ধে যোদ্ধা ভাবে এবং তাদের পুরুষ ও নারী সদস্যদের যথাক্রমে মোজাহিদ ও মোজাহিদা সম্বোধন করে। শুধু তাই নয়, মুজাহিদ হিসাবে শাহাদত লাভের প্রমাণ হিসাবে তাদের কর্মীদের মৃত
লাশ অন্যদের মত শক্ত বা শীতল হয় না বলে তারা দাবী করে।
হিজবুত তওহীদ এর ভ্রান্ত মতবাদ:
কোন ব্যক্তি ‘হিযবুত তওহীদে’ যোগ দিলেই দুই শহীদের মর্যাদা পাবে, যদি সে শেষ পর্যন্ত থাকে। শুধু তাই নয়, তাদের জন্য জান্নাত নিশ্চিত। এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহের অবকাশ নেই। এখন কে কোন জান্নাতে যাবে তা আমলের উপর নির্ভর করবে (আল্লাহ মো’জেজা হিজবুত তওহীদের বিজয় ঘোষণা, পৃ. ৬৫)।
এই দলের নিকট প্রকৃত ইসলাম হল তাওহীদ ও জিহাদ। আর ইবাদত হল খেলাফত। অর্থাৎ প্রকৃত ইবাদত হল আল্লাহর দেয়া দীন (জীবন-ব্যবস্থা) মোতাবেক তাঁর পক্ষ হয়ে শাসন করা। ছালাত, ছিয়াম, হজ্জ, যাকাত এগুলো প্রকৃত ইবাদতের কাজ নয় বরং এগুলো জীবন পরিচালনার জন্য কিছু বিধান মাত্র (দাজ্জাল? ইহুদি-খ্রিষ্টান ‘সভ্যতা’!, পৃ. ৮৭)। এই ইবাদত তথা খিলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তাদের আক্বীদা ও ঈমানের মূল কেন্দ্রবিন্দু হল জিহাদ। এমনকি ঈমানের মূল শর্তই হল জিহাদ (ইসলামের প্রকৃত সালাত, পৃ. ৪২)। তাই সশস্ত্র জিহাদ ত্যাগ করলে সে আর মুমিন থাকে না, বরং দ্বীন থেকেই সে বহিষ্কৃত হয়ে যায়। ছালাতকে তারা মনে করেন জিহাদের প্রশিক্ষণ। এজন্য তারা সামরিক কুচকাওয়াজের মত সটান ও দ্রুতগতিসম্পন্ন নব্য এক ছালাত রীতি চালু করেছে। তারা মনে করে, উম্মতে মুহাম্মাদী সম্পূর্ণ জাতিটাই সামরিক বাহিনী (ইসলামের প্রকৃত সালাত, পৃ. ১৩, ১৯, ৩০-৩১, ৩৫)।
হজ্জ সম্পর্কে তাদের ধারণা, এটি কোন ইবাদত নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মুসলমানদের বার্ষিক সম্মেলন। তাদের ভাষায়- ‘হজ্জ কোন তীর্থ যাত্রা নয়, আন্তর্জাতিক কনফারেন্স। এসলামের অন্য সব কাজের মতোই আজ হজ্ব সম্বন্ধেও এই জাতির আকীদা বিকৃত হয়ে গেছে। এই বিকৃত আক্বীদায় হজ্জ আজ সম্পূর্ণরূপে একটি আধ্যাত্মিক ব্যাপার, আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করার পথ। প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে- আল্লাহ সর্বত্র আছেন, সৃষ্টির প্রতি অণু-পরমাণুতে আছেন, তবে তাঁকে ডাকতে, তাঁর সান্নিধ্যের জন্য এত কষ্ট করে দূরে যেতে হবে কেন?’
তারা বলে, দাড়ি-টুপি-বোরকা ইত্যাদি ইসলামের কোন লেবাস নয়। তাদের আক্বীদা হল, আল্লাহর রাসূল (ছাঃ) কোন ধর্মকেই বাতিল করেননি, বরং সবগুলোকে সংরক্ষণ ও সত্যায়ন করেছেন। তাই সব ধর্মই সত্য। সকল ধর্মের মর্মকথা, সবার ঊর্ধ্বে মানবতা (http://www.hezbuttawheed.org)।
কালো তালিকাভুক্ত সংগঠন হিযবুত তওহীদ:
সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত বক্তব্য-বিবৃতি দিলেও ২০০৮ সালে সংগঠনটিকে কালো তালিকাভুক্ত করে বাংলাদেশ সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (উইকিপিডিয়া)। হিযবুত তাওহীদ বা এর সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সরকারি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী যেন সম্পৃক্ত না হন, সে-ব্যাপারে কয়েক বছর আগে একটা নির্দেশনাও এসেছিল সরকারের তরফ থেকে। ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর মন্ত্রিপরিষদ থেকে একটি চিঠির মাধ্যমে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।
এর পরে ২০১৫ সালের ২২ জানুয়ারি জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ সংগঠন হিজবুত তাওহীদ বা এর
কোনো অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠানে যোগ না দিতে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সতর্ক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গোয়েন্দা সূত্র থেকে জানা যায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যেসব ‘সন্দেহভাজন’ সংগঠন নিষিদ্ধকরণের পর্যলোচনার তালিকায় আছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হিযবুত তাওহীদ। কয়েক বছর ধরে সংগঠনটি প্রচারণার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে। দলীয় পত্রিকাসহ বিভিন্ন নামে সভা-সেমিনার করছে তারা। সরকারি বিভিন্ন দপ্তরসহ গণমাধ্যম অফিসে তারা তাদের প্রচারপত্র বিলি করছে।
তারা সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের নিজেদের সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করারও চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে গোয়েন্দাদের
সূত্র থেকে। অতএব এদের ব্যাপারে হুঁশিয়ার থাকা একান্ত যরূরী।