লেখক: মাওলানা হাবিবুর রহমান
প্রতিষ্টাতা পরিচালক দারুর উলূম মাদ্রাসাতুল উম্মাহ্ ফ্রান্স।
হালযামানায় মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই। বিশ্বের যেদিকে তাকানো যায়
সেদিকেই মজলুম মুসলিম জনতার আর্তনাদ। বিশ্বের সব জায়গায় মুসলিম নিধন চলছে,অথচ আজ কোটি কোটি মুসলিম রয়েছে সারা বিশ্বে। এরপরও এরা নির্যাতিত, নিপীড়িত, অবহেলিত। এর কারন শুধুই নিজেদের মধ্যে অনৈক্য।রাজনীতি অর্থনীতি
ও শিক্ষানীতি প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রেই মুসলমানদের অবস্তা খুবই শোচনীয়। বিশেষ করে ইলেক্ট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় নেই তাদের কোন দখল।পতনের দ্বার প্রান্তে আজ তাদের অস্তিত্ব। এহেন নাজুক পরিস্তিতিতে পারস্পারিক বিচ্ছিন্নতাকে বিদায় দিয়ে ঐক্যের রজ্জুকে সুদৃঢ় করা সময়ের অপরিহার্য দাবি। কিন্তু খুবই আক্ষেপের সাথে বলতে হয়, সময়ের এ মুমুর্ষ অবস্তা ভুলে গিয়ে একটি অপশক্তি মুসলমানদের মাঝে বিচ্ছিন্নতার বিষবাষ্প ছড়াতে আদাজল খেয়ে চেষ্ঠা চালাচ্ছে। চার মাযহাবের ইমামগনের মধ্যকার
উত্তম আর অনুত্তম বিষয় নিয়ে সৃষ্ঠ বিরোধকে ইমান ও কুফুরের বিরোধ আখ্যা দিয়ে মুসলিম সমাজের সামনে পেশ করছে। এই ভয়ংকর ও শক্তিশালি ফিৎনার নাম হল
মাযহাব অমান্যকারী “সালাফি ফিৎনা”। এদেরকে গায়েরে মুকাল্লিদ, লামাযহাবি,
আহলে হাদিস ও বলে। আসলে এরা সালাফি নাম দিয়ে সালফে সালিহিনকে কলঙ্কিত করতে চায়। সালাফি ভাইয়েরা মুহাদ্দিসিনকে নষ্ট করতে তাদের নাম দিয়েছে আহলে হাদিস। এরা জামাতে সাহাবার গায়ে কালিমা লেপন করতে জামাতে ইসলামী নাম
দিয়েছে। এই সালাফিরা যখন তাদের বিরোদ্ধে কোনো হাদিস আসে তখন হাদিস
সহীহ হওয়া সত্ত্বে ও তারা হাদিসটি দুর্বল আখ্যা দিয়ে থাকে।তারা হক্কানী মুজতাহিদ ইমামগন ও তাদের অনুসারীদেরকে মুশরিক বলে গালিগালাজ করে। এছাড়া তারা
অনেক বিজাতীয় সভ্যতাকে এনে মুসলিম সমাজে প্রচার করে।আমাদের
আকাবিরিনে কেরাম তাদের দাত ভাংগা জবাব দিয়ে এসেছেন।
বর্তমান সময়ে সালাফি ফিৎনাটি নতুন রুপ নিয়েছে:
এখনকার সময়ে এ ফিৎনাটি নতুন রুপ নিয়ে দাড়িয়েছে। এরা ইয়াহুদি,খৃষ্ঠানদের
কাছ থেকে অনেক অর্থনৈতিক সাহায্য পাচ্ছে।ফলে তাদের মিশন চলছে জোর
গতিতে। তারা প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার মাধ্যমে আজ গোটা বিশ্বে তাদের এই
বাতিল মতবাদকে প্রচার করছে।অথচ এখনো ঘুমিয়ে আছেন আমাদের আলিম
সমাজ। কিন্তুএই অপশক্তিকে এখনই রুখার সময়। আমাদের কে প্রযুক্তির জগতে
যেতে হবে। এপশক্তির দাত ভাংগা জবাব দিতে হবে।কথায় আছে “বাতিল য়ে রুপে
আসে সে রুপে তার মোকাবিলা করতে হয়”।আজ তারা ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ায় ভিডিওর মাধ্যমে তাদের এই অপপ্রচারের মিশন চালাচ্ছে।ইন্টারনেট,ফেইসবুক ইউটব ও টুইটার
সহ বিভিন্ন ব্লগের মাধ্যমে তাদের মিশনের কাজ করছে। আর আমাদের উলামায়ে
কেরাম এগুলো জায়েয কি না জায়েয তা নিয়ে চিন্তায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
এজন্য আমাদের উলামায়ে কেরাম কে প্রযুক্তির জগতে আসতে হবে।ইন্টারনেট ব্লগ ইত্যাদিকে কাজে লাগাতে হবে, এবাতিল মতবাদের বিরোদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।
পরে আফসোস করা ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না। দোয়া করি আল্লাহ হক্বের আওয়াজকে দুনিয়ার আনাচে কানাচে পৌছে দেন।
সালাফিদের দাবি:
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ রা. নামাজ এবং শরীয়াতের অনেক মাসালা ভুলে গিয়ে ছিলেন। نعوذ بالله সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে বিখ্যাত মুহাদ্দিস এবংমুফতি , হজরত
আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ রা: জীবনের বেশিরভাগ সময় রাসুল সা. এর খিদমতে
কাটিয়েছেন ! যার দরুন অনেকে মনে করতেন ,হজরত ইবনে মাস্উদ রা. রাসুলের পরিবারের সদস্য ছিলেন ! যার ব্যপারে রাসুল স. বলেন :تمسكوا بعهد ام عبدالله : তুমরা
আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ এর কথা এবং তরিকা কে মজবুতির সাতে ধর ! রাসুল সা.
আরো বলেন : হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ তুমাদেরকে যে ভাবে কুরআন শিক্ষা
দেন সে ভাবে কুরআন শিক্ষা কর ! রাসুল সা. আরো বলেন :
(لوكنت مومرااحدامنهم منغير مشورة لامرت عليهم ابن ام عبد (ترمذي :
যদি আমি কাউকে সাহাবা কেরামের মধ্যে কোন ফরামর্শ ছাড়া আমীর অতবা
হাকীম বানাতাম তাহলে আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ কে বানাতাম। এছাড়া শরীয়তের
ব্যপারে অনেক কথা হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ রা. এর ব্যপারে রাসূল সা.
বলেছেন। সালাফি ভাইয়েরা কি বলে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ রা. এর
বেপারে? সালাফিদের অন্যতম আলিম মাওলানা আব্দুর রহমান তার লিখিত
তিরমিজী সরীফের শরাহে লিখেন : ولو تنزلنا وسلمنا ان حديث ابن مسعود هذا صحيح او حسن فاالظاهر ان ابن مسعود قد نسيه كما قدنسي امورا كثيرة (تحفةالاحوذي :جلد١/صفحه٢٢١
অর্থাত : যদি আমরা মেনে নেই হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাস্উদ রা. এর অনেক
হাদীস এবং কথা সহীহ কিন্ত তিনি রফে য়াদাইন এর মাসআলা ভুলে গেছেন , যে ভাবে
তিনি শরিয়তের অনেক মাসআলা ভুলে গিয়েছিলেন ! نعوذ باالله এই হলো সালাফিদের
আসল চেহারা যখন তাদের বিরুদ্দে শরীয়াতের কুন দলিল আসে পড়ে তখন তারা সাহাবীদের বিরুদ্দে এমন মিথ্যা অপবাদ তুলতে ও ভয় করেনা ?