অমর ২১শে ফেব্রুয়ারি আজ। রক্তস্নাত ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিবহ মহান শহীদ দিবস। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা
দিবস। জাতির জীবনে অবিস্মরণীয় ও চিরভাস্বর দিন আজ। ১৯৫২ সালের এই দিনে মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা রাখতে গিয়ে
বুকের রক্ত ঢেলে দিয়েছিল সুনার ছেলেরা। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে বায়ান্ন’র ২১শে ফেব্রুয়ারি রঞ্জিত হয় রাজপথ। রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্রভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে বাঙালি। আর ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশ। তাই বাঙালির
কাছে একুশে ফেব্রুয়ারি চির প্রেরণার প্রতীক। একুশের এই দিনে কৃতজ্ঞ চিত্তে ভাষা শহীদদের স্মরণ করছি। সেদিন সালাম,
রফিক জব্বারসহ নাম না জানা আরো অনেকে শহীদ হয়েছেন, তাদের মধ্যে উল্যেখযোগ্য কয়েকজনের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
তুলে ধরছি।
ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম:
ফেনী জেলার দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের লক্ষণপুর (সালামনগর) গ্রামে ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর
জন্ম হয় আবদুস সালামের। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে সালাম সবার বড়। প্রথমে মাতুভূঞা করিম উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়
এবং ১৯৪২ সালে আতার্তুক উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ম শ্রেণীতে ভর্তি হলেও পারিবারিক কারণে আর লেখাপড়া করতে পারেন নি।
তার পিতা ফাজিল মিয়া কৃষিজীবী ছিলেন। অতঃপর চাচাতো ভাই আবদুল হালিমের সহায়তায় ঢাকা চলে আসেন।
সেখানে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মতিঝিল ৮৫ দিলকুশাস্থ ‘ডাইরেক্টার অব ইন্ডাষ্ট্রিজ’ বিভাগে পিয়নের চাকুরি নেন।
তখন মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে রাজধানী ছিল আন্দোলন মুখর। ২৭ বছরের টগবগে যুবক সালাম জাতির জন্য, মায়ের
ভাষার জন্য আন্দোলনে যোগ দেন। ছুটে যান মিছিলে।

২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গনে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সেই মিছিলে তিনিও যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের বর্বরোচিত গুলিবর্ষনে লুটিয়ে
পড়েন। আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। দেড় মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর
৭ এপ্রিল, ১৯৫২ তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। পরদিন সকালে জানাজা শেষে আজিমপুর গোরস্থানে তার লাশ দাফন
করা হয়।
১৯৯৯ সালের ১৮ নভেম্বর ফেনী জেলা পরিষদের অর্থায়নে ফেনী শহরের মিজান রোডে অবস্থিত কমিউনিটি সেন্টার
ভাষা শহীদ সালামের নামে নামকরণ করা হয়। ২০০০ সালে ফেনী জেলার একমাত্র স্টেডিয়াম ভাষা শহীদ সালামের নামে নামকরণ হয়। শহীদ সালামের জন্মস্থান লক্ষ্মনপুর গ্রামের নাম পরিবর্তন করে সরকারী ভাবে সালাম নগর হিসেবে স্বীকৃতি
পায়। ২০০০ সালে সরকার শহীদ আবদুস সালামকে মরনোত্তর ‘একুশে পদক’ প্রদান করেন। ২০০৭ সালে ২১ ফেব্রুয়ারী
দাগনভুঞা উপজেলা মিলনায়তন ‘ভাষা শহীদ সালাম মিলনায়তন’ নামে নামকরণ করা হয়। এছাড়া ভাষা শহীদ আবদুস সালামের স্মৃতি রক্ষায় সালাম নগর গ্রামে ৬৩ লাখ ৮০ হাজার ২৫৮ টাকা ব্যয়ে একটি স্মৃতি গ্রন্থাগার ও জাদুঘর নির্মান
করা হয়েছে।
শহীদ রফিক উদ্দিন:
শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদের জন্ম ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার পারিল বলধারা (রফিকনগর) গ্রামে। তার পিতার নাম- আব্দুল লতিফ, মাতার নাম- রাফিজা খাতুন। ৫ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে রফিক
উদ্দিন আহমদ ছিলেন ভাইদের মধ্যে সবার বড়। পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। শৈশবে প্রাথমিক পড়ালেখা শুরু
কলকাতার মিত্র ইনস্টিটিউটে। তারপর ১৯৪৯ সালে মানিকগঞ্জের বায়রা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ওই স্কুল থেকে তিনি
১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ম্যাট্রিক পাশ করার পর রফিক উদ্দিন মানিকগঞ্জ দেবেন্দ্রনাথ কলেজে বানিজ্য বিভাগে
ভর্তি হন। আই.কম. ক্লাস পর্যন্ত পড়লেও পরে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। কলেজের পাঠ ত্যাগ করে ঢাকায় এসে পিতার
সঙ্গে প্রেস পরিচালনায় যোগ দেন।

২১শে ফেব্রুয়ারি শাসকগোষ্ঠীর জারীকৃত ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে যে বিক্ষোভ মিছিল হয় সেখানে তিনি অংশগ্রহন করেন।
পুলিশের বেদম লাঠিচার্জ ও কাদানে গ্যাসের কারনে অন্যান্যদের সাথে তিনিও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ছেড়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে আশ্রয়গ্রহন করতে যান। এ সময়ে পুলিশের গুলী সরাসরি তার মাথায় আঘাত লাগে এবং তাঁর মাথার খুলি
উড়ে যায়। তিনি সাথে সাথেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। সম্ভবত ২১শে ফেব্রুয়ারীর প্রথম শহীদ হওয়ার মর্যাদা রফিক
উদ্দিন আহমদই লাভ করেন। তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। তবে দুঃখজনকভাবে পরবর্তীতে তার কবর
চিহ্নিত করা সম্ভব হয় নি। রফিক সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক চর্চায় বিশেষভাবে উৎসাহী ছিলেন। কলকাতায় থাকাকালে তিনি
পারিল-বলধারা যুবক সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ছিলেন।
ভাষা শহীদ আবুল বরকত:
ভাষা শহীদ আবুল বরকতের জন্ম ১৯২৭ সালের ১৬ জুন। ভারতের পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর থানার বাবলা নামক গ্রামে। আবুল বরকতের ডাক নাম ছিল আবাই। তিনি মৌলবী শামসুদ্দীন সাহেবের জ্যেষ্ঠপুত্র। মা হাসিনা বিবি।
পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। প্রাথমিক পড়াশুনা শেষে তিনি পার্শ্ববর্তী গ্রাম তালিবপুর ইংলিশ হাই স্কুলে ভর্তি হন। ওই স্কুল থেকে ১৯৪৫ সালে মেট্রিক পাশ করেন। মেট্রিক পাশের পর তিনি বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে ভর্তি হন। এই কলেজ থেকে ১৯৪৭ সালে তিনি ইন্টারমিডিয়েট পাশের পর ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৪৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে অনার্স কোর্সে ভর্তি হয়ে ১৯৫১ সালে অনার্স পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন। এরপরে
তিনি একই বিভাগে মাস্টার্সে ভর্তি হন। ভালো ছাত্রের পাশাপাশি তিনি স্বভাব-চরিত্র ও ব্যবহারে ছিলেন অমায়িক।

তিনি ভাষা আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়ে পড়েন। অধিকার আদায়ের দাবিতে শত শত বিদ্রোহী কন্ঠে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই”
এই দাবীতে আন্দোলোন তীব্র হয়ে উঠে। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি দিন আবুল বরকত মেডিকেল কলেজের ১২ নম্বর শেডের বারান্দায় দাড়িয়ে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতাকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন। পুলিশের সঙ্গে ছাত্র জনতার সংঘর্ষ হয়। পুলিশ
লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় পুলিশের ছোড়া গুলি তার তলপেটে লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সকল চেষ্টা ব্যর্থ করে রাত ৮টা ১৫ মিনিটে তিনি মারা যান। সেদিনই গভীর রাতে পুলিশের কড়া প্রহরায় শহীদ বরকতের লাশ আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়।
ভাষা শহীদ শফিউর রহমান:
ভাষা শহীদ শফিউর রহমানের জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোন্নগরে ১৯১৮ সালের ২৪ জানুয়ারী। তাঁর পিতা মৌলবী
মাহবুবুর রহমান ছিলেন ঢাকার পোস্ট এন্ড টেলিগ্রাফ অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট। পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়াশুনা শেষ করে কলকাতার গভর্ণমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজ থেকে আই.কম. পাস করেন।
পারিবারিক কারণে আর লেখাপড়া করতে পারেন নি। পরে তিনি চব্বিশ পরগনা সিভিল সাপ্লাই অফিসে কেরানীর চাকরি
শুরু করেন। ১৯৪৫ সালের ২৮ মে শফিউর রহমান কলকাতার তমিজউদ্দিনের কন্যা আকিলা খাতুনকে বিবাহ করেন।
আকিলা খাতুনের বয়স তখন ১২ বছর।

১৯৫২ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারী শফিউর রহমান সকাল ১০টায় বাইসাইকেলে চড়ে ঢাকার ৬ নং রঘুনাথ দাস লেনের বাসা
থেকে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হন। ঐ দিন সকাল ১০টার কিছু পরে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবীতে আন্দোলনের
অংশ হিসেবে নওয়াবপুর রোডে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ চলছিল। পুলিশ ঐ বিক্ষোভে গুলী চালালে শফিউর রহমানের
পৃষ্ঠদেশ ভেদ করে একটি গুলি বের হয়ে যায়, তিনি তাৎক্ষনিকভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয় এবং সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি হাসপাতালেই মারা যান। মরহুম শফিউর রহমানের লাশ
আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হস্তান্তর না করে পুলিশের তত্বাবধানে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। শফিউর রহমানের
মৃত্যুর ৩ মাস পরে তিনি একটি পুত্র সন্তান লাভ করেন। গৌরদীপ্ত ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদ শফিউর রহমানকে
বাংলাদেশ সরকার মরণোত্তর একুশে পদক (২০০০) প্রদান করেন। শহীদ শফিউর রহমানকে আজিমপুর কবরস্থানে
দাফন করা হয়।
ভাষা শহীদ আব্দুল জব্বার:
ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের জন্ম ১৯১৯ইং মুতা: ১৩২৬ বাংলা, ২৬ আশ্বিন। ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থানার পাঁচুয়া গ্রামে। বাবা আবদুল কাদের, মা সাফিয়া খাতুন। পড়াশুনার হাতেখড়ি পরিবারে। তারপর তিনি গ্রাম্য পাঠশালায় প্রাথমিক পড়াশুনা শুরু করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১০/ ১২ বছর। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করার পরে পারিবারিক অসচ্ছলতার কারনে লেখাপড়া ত্যাগ করে পিতার কৃষিকাজে সাহায্য করা শুরু করেন।

১৫-১৬ বছর বয়সে তিনি খেয়ালের বশবর্তী হয়ে সকলের অজান্তে একদিন গৃহত্যাগ করে ট্রেনে চেড়ে নারায়নগঞ্জ আসেন। সেখানে জাহাজ ঘাটে এক ইংরেজ সাহেবের সান্নিধ্য লাভ করেন। সাহেবের অনুগ্রহে একটি চাকরি লাভ করে বার্মায় গমন
করেন। ১০/১২ বছর বার্মায় থাকার পর তিনি দেশে ফিরেন। দেশে এসে নিজ গ্রামে তিনি দৈনন্দিন জিনিসপত্রের ছোটখাট
একটি দোকান দেন। এরপর তিনি আমেনা খাতুন নামে এক মেয়েকে বিবাহ করেন এবং ১৯৫১ সালের শেষের দিকে এক
পুত্র সন্তানের পিতা হন। সন্তানের নাম রাখেন নুরুল ইসলাম বাদল। ২১শে ফেব্রুয়ারীর একদিন আগে ক্যান্সারে আক্রান্ত শাশুড়ীকে চিকিৎসার জন্যে ঢাকা নিয়ে আসেন ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শাশুড়িকে হাসপাতালে ভর্তি করে আবদুল জব্বার মেডিকেলের ছাত্রদের আবাসস্থল (ছাত্র ব্যারাক) গফরগাঁও নিবাসী হুরমত আলীর রুমে (২০/৮) উঠেন। ২১শে ফেব্রুয়ারীর দিন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে ছাত্র-জনতার মিছিলে সক্রিয় অংশগ্রহন করেন ও
স্লোগান দেন। মিছিলে পুলিশের অতর্কিত গুলীবর্ষনে তিনিও আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল
কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জব্বারকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন
করা হয়।
ভাষা শহীদ অহিউল্লাহ:
ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের তালিকায় একজন নয় বছরের নাবালক ছেলে রয়েছে, যার নাম হলো
অহিউল্লাহ। তিনি ছিলেন জনাব হাবিবুর রহমানের ছেলে। হাবিবুর রহমান পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন। ২২শে
ফেব্রুয়ারি আগের দিন ভাষার দাবিতে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে হত্যার শিকার রফিক, জব্বার, বরকতদের স্মরণে
শোক মিছিল বের করে ওই এলাকার ছাত্ররা। নবাবপুর রোডে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ প্রদর্শনকালে পুলিশ গুলীবর্ষন করে।
সেনাদের গুলিতে শহীদ হন ভাষাশহীদ শফিউর রহমান, ২৬ বছর বয়সী আবদুল আউয়াল নামের একজন নিরীহ
রিকশাচালক। নবাবপুর রোডের খোশমহল রেস্টুরেন্টের সামনে দাড়ানো আনুমানিক ৯ বছর বয়সী অহিউল্লাহর মাথায়
সরাসরি গুলী আঘাত হানে। এতে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়।

ঘাতকরা তিনটি লাশ নিয়ে যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। শিশুর লাশটির প্রত্যক্ষদর্শী ডা. মেজর (অব.)
মাহফুজ হাসান প্রথমে শিশুটির নাম জানতে পারেন শফিউল্লাহ। কিন্তু ঘণ্টাদুয়েক পর নিশ্চিত হওয়া যায় নিহত ওই
শিশুটির নাম শফিউল্লাহ নয়, তার নাম অহিউল্লাহ। ২৩শে ফেব্রুয়ারীর ১৯৫২ তারিখের দৈনিক আজাদে অহিউল্লাহর
শহীদ হওয়ার খবর ছাপানো হয়। খবর পেয়ে শিশুটির পিতা রাজমিস্ত্রি মো. হাবিবুর রহমান ছুটে আসেন হাসপাতালে।
তিনি এসে ছবি দেখে তার পুত্র অহিউল্লাহর লাশ শনাক্ত করেন। অহিউল্লাহর পিতা হাবিবুর রহমান নিজ পুত্রের লাশ নিতে চাইলেও পাকিস্তানি সেনারা লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি। অহিউল্লাহর লাশ সেনারা রাতের অন্ধকারে অত্যন্ত
গোপনে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করে।