কিয়ামতের অন্যতম বড় আলামত হচ্ছে আখেরী যামানায় কিয়ামতের সন্নিকটবর্তী সময়ে বিশাল আকারের একটি ধোঁয়া
বের হয়ে আকাশ এবং যমীনের মধ্যবর্তী খালি জায়গা পূর্ণ করে ফেলবে। এই ধোঁয়া মুমিন ব্যক্তিদেরকে সামান্য একটু সর্দি
কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত করে দিবে। কাফেরদের শরীরের ভিতরে প্রচন্ডভাবে প্রবেশ করবে। ফলে তাদের শরীর ফুলে যাবে
এবং শরীরের প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে ধোঁয়া বের হবে। এটি তাদের জন্য একটি যন্ত্রনাদায়ক আযাবে পরিণত হবে। আললাহ
ফেলবে মানব জাতিকে। এটা হবে এক যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি। তখন তারা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে এই
শাস্তি হতে মুক্তি দিন আমরা ঈমান আনয়ন করবো। তারা কি করে উপদেশ গ্রহণ করবে? তাদের কাছে তো এসেছে সুস্পষ্ট একজন রাসূল। অতঃপর তারা তাঁকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করে বলেছেঃ সে তো শেখানো কথা বলছে, সে তো একজন পাগল’’।
আমি আযাব একটুখানি সরিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু এরপরও তোমরা পূর্বের ন্যায় আচরণ করবে। (সূরা দুখানঃ ১০-১৫)
ধোঁয়া সম্পর্কে রাসূল (সা.) বলেন:
মুসলিম শরীফে হুজায়ফা ইবনে উসায়েদ (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ ‘‘একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম আমাদের কাছে আগমণ করলেন। আমরা তখন কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বললেনঃ যতদিন তোমরা দশটি আলামত না দেখ ততদিন কিয়ামত হবেনা। (১) ধোঁয়া (২) দাজ্জালের আগমণ (৩) দাববা (ভূগর্ভ থেকে নির্গত অদ্ভুত এক জানোয়ারের আগমণ) (৪) পশ্চিম আকাশে সূর্যোদয় (৫) ঈসা ইবনে মারিয়ামের আগমণ (৬) ইয়াজুয-মা’জুযের আবির্ভাব (৭) পূর্বে ভূমিধস (৮) পশ্চিমে ভূমিধস (৯) আরব উপদ্বীপে ভূমিধস (১০) সর্বশেষে ইয়ামান থেকে একটি আগুন
বের হয়ে মানুষকে সিরিয়ার দিকে হাঁকিয়ে নিবে’’ (মুসলিম, অধ্যায়ঃ কিতাবুল ফিতান)।
তিনি আরো বলেনঃ ‘‘নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে তিনটি বিষয়ে সতর্ক করছেন। (১) ধোঁয়া, যা মু’মিনকে
কেবল এক প্রকার সর্দিতে আক্রান্ত করে দেবে এবং কাফেরের শরীরের প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে প্রবেশ করে প্রতিটি ছিদ্র দিয়ে বের
হতে থাকবে। (২) ভূগর্ভ থেকে নির্গত অদ্ভুত এক জানোয়ারের আগমণ। (৩) দাজ্জালের আগমণ, (তাফসীরে তাবারী, ইবনে কাছীর)। মোটকথা কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ধোঁয়ার আলামতটি বের হয়ে সমগ্র পৃথিবী ছেয়ে ফেলবে। কুরআনের আয়াত
ও বিশুদ্ধ হাদীছের মাধ্যমে প্রমাণিত বিধায় তাতে বিশ্বাস করা প্রত্যেক মুমিনের উপর ওয়াজিব।