দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি : ইসলামী দৃষ্টিকোণ (পূর্ব প্রকাশিতের পর)

দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণ:
৯.পণ্যের স্বল্পতা : অনেক সময় পণ্যের স্বল্পতা বা কতিপয় নাগরিকের পণ্য মজুদের প্রবণতার কারণে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়। সম্পদশালী ব্যক্তিরা বাজারে আসে এবং পণ্য
ক্রয় করে জমা করে রাখে। এদিকে বাজারে পণ্যের স্বল্পতার দরুন দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়।
চাই সে ব্যক্তি নিজের জন্য পণ্য সংগ্রহ করুক বা পরবর্তীতে চড়া দামে বিক্রির লক্ষ্যে মজুদদারির উদ্দেশ্যে সংগ্রহ করুক। মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রফেসর শায়খ আতিইয়া সালিম বলেন, ‘এটাই হল দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ’।
১০. বিলাসিতা : বিলাসিতা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। বিলাসী ব্যক্তিরা তাদের
চাহিদা পূরণের জন্য যেকোন মূল্যে পণ্য কিনতে তৎপর ও উৎসাহী থাকে। এজন্য
ইসলাম আমাদেরকে বিলাসিতা থেকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছে। কারণ বিলাসিতার কারণে পূর্ববর্তী বহু জাতি ধ্বংস হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন,
‘অতএব তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতগুলির মধ্যে এমন দূরদর্শী লোক কেন হ’ল না,
যারা জনপদে বিপর্যয় সৃষ্টিতে বাধা দিত? তবে অল্প কিছু লোক ব্যতীত, যাদেরকে
আমরা তাদের মধ্য হ’তে (আযাব থেকে) রক্ষা করেছিলাম। অথচ যালেমরা তো ভোগ-বিলাসের পিছনে পড়ে ছিল। আর তারা ছিল মহা পাপী। আর তোমার প্রতিপালক এমন
নন যে, সেখানকার অধিবাসীরা সৎকর্মশীল হওয়া সত্ত্বেও জনপদ সমূহকে অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে দিবেন’ (হূদ ১১/১১৬-১১৭)।
মু‘আয বিন জাবাল (রাঃ)-কে ইয়েমেনে প্রেরণের সময় রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছিলেন,
‘তুমি বিলাসিতা থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ আল্লাহর বান্দারা বিলাসী নন’।
১১. যাকাত প্রদান না করা : সম্পদের যাকাত প্রদান না করা বালা-মুছীবত ও মূল্যবৃদ্ধির একটি কারণ। যাকাত প্রদান করলে সম্পদে বরকত বৃদ্ধি পায় এবং ধনী-গরীব
নির্বিশেষে সমাজের মানুষের মধ্যে ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অটুট থাকে।

দালালদের অনুপ্রবেশ দ্রব্যমূল্য বাড়ায়:

১২. দালালী : ক্রেতা ও বিক্রেতার মাঝে দালালের অনুপ্রবেশ ঘটলে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যায়। এজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন শহুরে যেন গ্রাম্য লোকের পণ্য বিক্রি না করে। তোমরা লোকদের ছেড়ে দাও। আল্লাহ তাদের কারো দ্বারা কাউকে রিযিক প্রদান করবেন’।
উক্ত হাদীছের প্রকৃত তাৎপর্য সম্পর্কে তাউস (রহঃ) ইবনু আববাস (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন, ‘কোন শহুরে গ্রাম্য লোকের পক্ষে পণ্য বিক্রি করবে না, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর একথার অর্থ কি? তিনি বললেন, ‘সে যেন তার জন্য দালালের ভূমিকা পালন না করে’।
ইবনু কুদামা (রহঃ) বলেন, ‘হাদীছের মর্মার্থ হ’ল, গ্রাম্যলোককে যখন তার পণ্য বিক্রি
করার সুযোগ দেয়া হবে, তখন মানুষ তা সস্তা দামে ক্রয় করতে পারবে এবং বিক্রেতাও তাদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু শহুরে (দালাল) যখন সেই পণ্য বিক্রি করার দায়িত্ব গ্রহণ করবে এবং শহরের প্রচলিত দামে ছাড়া পণ্য বিক্রি করতে অসম্মত
হবে, তখন নগরবাসীর জন্য তা কষ্টসাধ্য হবে’।
ছহীহ ফিক্বহুস সুন্নাহ প্রণেতা বলেন,
‘এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয় নিষেধ হওয়ার কারণে এটি হারাম ক্রয়-বিক্রয়ের অন্তর্ভুক্ত।
আর নিষেধ ক্রয়-বিক্রয় বাতিলের দাবী করে। অনুরূপভাবে মুসলমানদেরকে
ক্ষতিগ্রস্ত করার কারণেও এটি নিষিদ্ধ। কারণ গ্রাম্য ব্যক্তি শহরে এসে তার পণ্য বিক্রি
করতে পারলে হালাল কামাই করতে পারবে এবং মানুষেরাও তাদের প্রয়োজন পূরণ
করতে পারবে। কিন্তু দালাল যদি তার জন্য পণ্যমূল্য নির্ধারণের দায়িত্ব পালন করে, যে মানুষের প্রয়োজন ও তাদের দরিদ্রতা সম্পর্কে সম্যক অবগত, তখন সে লাভ সহ
এমনভাবে মূল্য বৃদ্ধি করে দিবে যে, কখনো তা দ্বিগুণ-বহুগুণে গিয়ে ঠেকতে পারে।
এটি ইসলামের উদারতা ও শরী‘আত প্রণেতার সহজতার বিরোধী। এজন্যই হাদীছে
এসেছে, ‘তোমরা লোকদের ছেড়ে দাও। আল্লাহ তাদের কারো দ্বারা কাউকে রিযিক
দিবেন’। আনাস (রাঃ) বলেছেন, ‘কোন শহরবাসী (দালাল) যেন গ্রামবাসীর পণ্য বিক্রি
না করে- এ বিষয়ে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। যদিও সে ব্যক্তি তার নিজের ভাই
বা পিতা হয়’।

প্রতারকের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়:

১৩. নাজাশ : ‘কোন পণ্য ক্রয়ের ইচ্ছায় নয়; বরং প্রকৃত ক্রেতাকে ঠকানোর উদ্দেশ্যে পণ্যের উচ্চদাম হাঁকা হল নাজাশ’।
এটা এক ধরনের প্রতারণা। এ ধরনের কর্মকান্ডের ফলেও জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এ ধরনের ক্রয়-বিক্রয়কে নিষেধ করে বলেন, ‘তোমরা প্রতারণামূলক দালালী করো না’। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) বলেন, দালাল হল সূদখোর, খিয়ানতকারী। এটি প্রতারণা, যা বাতিল ও অবৈধ’।
ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহঃ) বলেন, ব্যক্তি ক্রয়কৃত মূল্যের চেয়ে বেশী দামে ক্রয়
করেছি বলবে ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) তাকে নাজিশ বলেছেন। এক্ষেত্রে সে ঐ ব্যক্তির
সাথে সাদৃশ্য রাখে যে অন্যকে ধোঁকা দেয়ার জন্য পণ্যের বেশী দাম হাঁকে, অথচ তা
কেনার ইচ্ছা তার নেই। এজন্য হুকুমের ক্ষেত্রে তারা উভয়েই সমান। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী নাজিশ (দালাল) সূদখোর’।

শায়খ মুহাম্মাদ বিন ছালেহ আল-উছায়মীন (রহঃ) বলেন,

‘নাজাশ হারাম। কেননা নবী (ছাঃ) এ থেকে নিষেধ করে বলেছেন, ‘তোমরা
দালালী করো না’। এটি নিষিদ্ধ হওয়ার আরেকটি কারণ হ’ল, তা মুসলমানদের মাঝে
ঘৃণা ও শত্রুতার বীজ বপন করে। কারণ যখন জানা যাবে যে, ক্রেতাদের ক্ষতি সাধন
করার জন্য এই ব্যক্তি দালালী করে তখন তারা তাকে ঘৃণা করবে। অতঃপর ধোঁকা দেয়ার ক্ষেত্রে বিক্রয় ভঙ্গ করার সময় হয়ত বিক্রেতা তাতে সম্মত হবে না। তখন বিক্রেতা ও ক্রেতার মাঝেও শত্রুতার সৃষ্টি হবে’।
১৪. তালাক্কী : গ্রামের কৃষকরা পণ্য নিয়ে শহরের বাজারে প্রবেশ করার পূর্বেই তাদের
কাছ থেকে পাইকারীভাবে তা ক্রয় করে নেয়াকে তালাক্কী বলে। আব্দুল্লাহ (রাঃ) হতে
বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ী দলের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের নিকট থেকে
খাদ্য ক্রয় করতাম। নবী (ছাঃ) খাদ্যের বাজারে পৌঁছানোর পূর্বে আমাদের তা ক্রয় করতে নিষেধ করলেন’। ইবনু ওমর (রাঃ) হ’তে বর্ণিত আছে, রাসূল (ছাঃ) বলেন,
‘তোমরা পণ্য ক্রয় করো না তা বাজারে হাযির না করা পর্যন্ত’। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, ‘অনুচ্ছেদ : সস্তায় পণ্য ক্রয় করার মানসে অগ্রসর হয়ে কাফেলার সঙ্গে মিলিত হয়ে কিছু ক্রয় করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা। এ ধরনের ক্রয় প্রত্যাখ্যাত। কেননা জেনেশুনে এমন ক্রয় সম্পাদনকারী ব্যক্তি অবাধ্য ও পাপী। এটা ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ধোঁকা প্রদান করা।
আর ধোঁকা দেয়া নাজায়েয’।
এভাবে পাইকাররা কৃষকদের কাছ থেকে পণ্যসামগ্রী ক্রয় করে বাজারে একচেটিয়া
প্রভাব সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিতে পারে। সেজন্য রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরূপ ক্রয়-বিক্রয়কে নিষিদ্ধ করে বলেন, ‘তোমরা (পণ্যবাহী) কাফেলার সাথে (শহরে প্রবেশের
পূর্বে) সাক্ষাৎ করবে না’।
১৫. একজন ক্রেতা যখন কোন দ্রব্য কেনার জন্য বিক্রেতার সাথে দর-দাম করে,
তখন অন্য কেউ যদি তার দামের উপর দাম বলে তাহ’লে বিক্রেতা দ্রব্যের চাহিদা
দেখে অনেক সময় দাম বাড়িয়ে দেয়।
১৬. পণ্যদ্রব্য বিদেশে পাচার : আমাদের দেশের একশ্রেণীর মুনাফালোভী অসাধু
ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা অর্জনের আশায় সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশে তেল,
চামড়াসহ অন্যান্য দ্রব্য পাচার করে। ফলে দেশে সেসব পণ্যের ঘাটতি পড়ে এবং
মূল্য বেড়ে যায়।
১৭. বিভিন্ন পণ্যের উপর আরোপিত আমদানী শুল্ক বৃদ্ধির কারণেও অনেক সময়
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পায়।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে করণীয় :

১. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদ কিংবা যোগান বন্ধ করে মূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িত ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটকে গোয়েন্দা সংস্থা ও জনগণের সহযোগিতায় শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক
শাস্তির ব্যবস্থা করা। যাতে কেউ পরবর্তীতে এ ধরনের অপকর্ম করার দুঃসাহস না দেখায়।
২. বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, খরা প্রভৃতি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জনগণের কষ্ট
লাঘবের জন্য যথাযথ কর্মসূচী হাতে নেয়া।
৩. সূদভিত্তিক অর্থনীতির কবর রচনা করে ন্যায় ও ইনছাফপূর্ণ ইসলামী অর্থনীতি চালু করা।
৪. মধ্যস্বত্বভোগীরা যাতে অত্যধিক মুনাফা লাভের মানসে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে না
পারে সেজন্য কার্যকর নিয়ম-নীতি প্রণয়ন ও দন্ডবিধির ব্যবস্থা করা।
৫. হালাল উপায়ে উপার্জনের বন্দোবস্ত করা। অন্যদিকে অবৈধ উপায়ে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা এবং সরকার কর্তৃক জনগণের সম্পদের হিসাব গ্রহণ করা।
৬. সকল প্রকারের চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা, যাতে পণ্য আমদানী ও পরিবহনের খরচ কমে যায়।
৭. নাজাশ ও তালাক্কী জাতীয় প্রতারণামূলক ক্রয়-বিক্রয় যাতে না চলে সেজন্য বাজার তদারকির ব্যবস্থা করা।
৮. একজন ক্রেতা কোন জিনিসের দাম করলে তার উপর দাম না বলা। কারণ রাসূল
(ছাঃ) এরূপ করতে নিষেধ করেছেন। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন ‘কোন ব্যক্তি তার
মুসলমান ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় করবে না এবং তার ভাইয়ের
দামের উপর দাম বলবে না’। তিনি আরো বলেন, ‘কোন ব্যক্তি যেন তার ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের উপর ক্রয়-বিক্রয় না করে এবং কেউ যেন তার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের
উপর প্রস্তাব না দেয়। তবে তাকে অনুমতি দিলে ভিন্ন কথা’। ইবনু ওমর (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘কোন ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের ক্রয়-বিক্রয়ের প্রস্তাবের উপর বেচাকেনার প্রস্তাব দেবে না, যতক্ষণ না সে ক্রয় করে বা ছেড়ে যায়’।
উল্লেখ্য যে, পণ্যের মালিক ও ক্রেতা কোন জিনিস ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যাপারে ঐক্যমত
পোষণ করল, কিন্তু তা সম্পাদিত হ’ল না। এমন সময় অন্য আরেকজন এসে বিক্রেতাকে বলল, আমি এটি ক্রয় করব। মূল্য নির্ধারণের পর এটি হারাম। পক্ষান্তরে বিক্রিত পণ্যের
দাম যে বেশী বলবে তার কাছে পণ্য বিক্রি করা হারাম নয়।

সরকার কর্তৃক শুল্ক ও দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ:

৯. কোন দ্রব্যের উৎপাদন-সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিলে বা ঘাটতির আশংকা দেখা দিলে আমদানী উৎসাহিত করতে সরকার কর্তৃক শুল্ক কমিয়ে দেয়া এবং জনগণের মৌলিক প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বেশী বেশী আমদানী করা।
১০. দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির আশংকা দেখা দিলে সরকার কর্তৃক পণ্যদ্রব্যের মূল্য নির্ধারণ করা। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি জাতীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও নির্ধারণ কমিটি গঠন করা যেতে পারে। জাতীয় কমিটির অধীনে প্রতিটি মহানগরে বিভাগীয় কমিশনারকে এবং যেলায় যেলা প্রশাসককে প্রধান করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও নির্ধারণ
কমিটি গঠিত হবে।
১১. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য যেলায় যেলায় যে টাস্কফোর্স আছে তাকে সক্রিয় করতে
হবে এবং পণ্য সরবরাহ মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে।
১২. দেশে কৃষিপণ্যের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশাল মার্কেট গড়ে তুলতে হবে।
১৩. রাষ্ট্রীয় তত্ত্বাবধানে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ফসলাদি সংগ্রহ করা। যাতে উৎপাদনকারীরা ন্যায্যমূল্য পায় এবং বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
১৪. ব্যাংকগুলোতে এলসি (Letter of credit) বা ঋণপত্রের অর্থ পরিশোধের সময়সীমা কমিয়ে এক মাসের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। তাহ’লে আমদানীকারকরা মজুদের সময় পাবে না এবং আমদানীর সাথে সাথে আমদানীকৃত পণ্যদ্রব্য বাজারে চলে যাবে এবং সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে।
১৫. সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নযরদারী জোরদার করে চামড়া, তেলসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী ভারতে পাচার রোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সীমান্ত এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ করতে হবে, যাতে সেগুলো থেকে
ভারতে তেল পাচার না হয়।
১৬. উৎপাদনকারীরা যাতে অধিক পরিমাণে পণ্য উৎপন্ন করে সেজন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা এবং উৎসাহ দেয়া দরকার।
১৭. খাদ্যশস্য ও অন্যান্য আবশ্যকীয় ভোগ্যপণ্য ভর্তুকী সহকারে রেশনিং পদ্ধতিতে
বিতরণ করা।
১৮. রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার আওতায় ব্যাপকভাবে ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বণ্টনের সুব্যবস্থা গ্রহণ করা।
১৯. অসৎ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেলে সরকারীভাবে
খোলা বাজারে ন্যায্যমূল্যে পণ্যসামগ্রী বিক্রি করার ব্যবস্থা করতে হবে। এ লক্ষ্যে পূর্ব থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরকার মজুদ করে রাখবেন।
                                                                                                                                  [চলবে]