দেওয়ানবাগী সম্পর্কে লোমহর্ষক ১৫ টি তথ্য:

দেওয়ানবাগীর পরিচিতি:
নাম মাহবুব এ খোদা, দেওয়ানবাগী নামে পরিচিত। ১৯৪৯ সালের ১৪ই ডিসেম্বর মোতাবেক ২৭ শে অগ্রহায়ন ১৩৫৬ বাংলা।  ব্রাক্ষনবাড়ীয় জেলার আশুগঞ্জ থানাধীন বাহাদুরপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সৈয়দ আব্দুর রশিদ সরদার।
মাতা জোবেদা খাতুন । ছয় ভাই দুই বোন। ভাইদের মধ্যে সর্ব কনিষ্ঠ। সেখানকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা
থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি। ১৯৭১ সালে দেওয়ানবাগী মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতার পর
তাঁর ৩ নং সেক্টরের কমান্ডার শফিউল্লাহ সাহেবের সুপারিশে সেনাবাহিনীর ১৫ নং বেঙ্গল রেজিমেন্টে ইমামতির চাকুরী নেয়। ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতান আহমদ চন্দ্রপুরীর হাতে বাইয়াত গ্রহন করেন। পরে
স্বীয় মুর্শিদের কন্যা হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন। এ সুবাদে শশুরের কাছ থেকে খিলাফত লাভ করেন। এর কিছুদিন পর নারায়নগঞ্জের দেওয়ানবাগ নামক স্থানে আস্তানা গঠন করেন এবং নিজেকে “সুফী সম্রাট” হিসেবে পরিচয় দিয়ে পরিচিতি
লাভ করতে থাকেন। এরপর তিনি মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগ ঢাকা-১০০০ তে “বাবে রহমত” নামে আরেকটি দরবার
স্থাপন করেন। এখান থেকে তাঁর তত্ত্বাবধানে এবং নির্দেশে বাবে রহমত এর মূখপত্র “আত্মার বাণী” সহ বেশ কয়েকটি মাসিক
পত্রিকা ও গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।

দেওয়ানবাগী ভন্ডপীরের ভ্রান্ত আক্বীদা সমুহ:

ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীর মুখোশ উন্মোচনের স্বার্থে তার বলা কিছু জঘন্য কথা ও তার কিছু অপকর্ম নিচে দেওয়া হলো:
১) দেওয়ানবাগী বলেন, “ আমি দেখি ঢাকা ও ফরিদপুরের মধ্যবর্তী স্থান জুড়ে এক বিশাল বাগান ফুলে- ফলে সুশোভিত।
ওই বাগানের একস্থানে একটি ময়লার স্তূপ আমার চোখে পড়ে। আমি দেখতে পাই ওই ময়লার স্তূপে রাসুল (সাঃ) এর
প্রানহীন দেহ মোবারক পড়ে আছে। তাঁর মাথা মোবারক দক্ষিন দিকে আর পা মোবারক উত্তর দিকে প্রসারিত। বাম পা
মোবারক হাটুতে ভাঁজ হয়ে খাড়া অবস্থায় রয়েছে। আমি তাকে উদ্ধার করার জন্য পেরেশান হয়ে গেলাম। আমি এগিয়ে
গিয়ে তাঁর বাম পায়ের হাঁটুতে আমার ডান হাত দিয়ে স্পর্শ করার সাথে সাথে দেহে প্রাণ ফিরে এল।এবং তিনি আমাকে
বললেন, হে ধর্মপূনর্জীবন দানকারী! ইতমধ্যেই আমার ধর্ম আরও পাঁচবার পূনর্জীবন লাভ করেছে। একথা বলে রাসূল (সাঃ)
উঠে দাঁড়িয়ে হেটে হেটে সাথে চলে এলেন। এরপর আমার ঘুম ভেঙে গেল। ( সুত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ “রাসূল স.
সত্যিই কি গরীব ছিলেন?” ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।)
২) “একদিন ফজরের পর মোরাকাবারত অবস্থায় আমার তন্দ্রা এসে যায়। আমি তখন নিজেকে লুঙ্গি-গেঞ্জি পরিহিত
অবস্থায় রওজা শরীফের নিকট দেখতে পাই। নবীজীর রওজা শরীফ অপরিচ্ছন্ন, আবর্জনাপূর্ণ।দেখি রওজা শরীফে
শায়িত মহামানবের মাথা মোবারক পূর্ব দিকে এবং মুখমণ্ডল দক্ষিণ দিকে ফিরানো। এ অবস্থা দেখে আমি আফসোস
করতে লাগলাম। এমন সময় পাতার নীচ থেকে উঠে এসে তিনি বসলেন। তার বুক পর্যন্ত পাতার উপর বের হয়ে পড়ে।
তিনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনি দয়া করে আমার রওজা পরিষ্কার করে দেবেন না ? আমি বললাম, জী, দেব।
তিনি বললেন, তাহলে দিন না। এভাবে তিনবার বলায় আমি এক একটা করে পাতা পরিষ্কার করে দেই। এরপর আমার তন্দ্রা ভেঙে যায়।” ( সুত্রঃ দেওয়ানবাগীর স্বরচিত গ্রন্থ “রাসূল স. সত্যিই কি গরীব ছিলেন?” ১১-১২ প্রকাশকালঃ জুন ১৯৯৯।)
ভণ্ডপীর দেওয়ানবাগী সম্পর্কে লোমহর্ষক ১৫ টি তথ্য:
ভণ্ডপীর দেওয়ানবাগী কাফের।

দেওয়ানবাগী ভন্ডপীরের কুফুরী আক্বীদা সমুহ:

৩) “দেওয়ানবাগী এবং তার মুরীদদের মাহফিলে স্বয়ং আল্লাহ্, সমস্ত নবী, রাসূল (সা), ফেরেস্তা, দেওয়ানবাগী ও তার
মুর্শিদ চন্দ্রপাড়ার মৃত আবুল ফজলসহ সমস্ত ওলী আউলিয়া, এক বিশাল ময়দানে সমবেত হয়ে সর্বসম্মতিক্রমে ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীকে মোহাম্মাদী ইসলামের প্রচারক নির্বাচিত করা হয়। অত:পর আল্লাহ সবাইকে নিয়ে একমিছিল বের করেন। মোহাম্মাদী ইসলামের চারটি পতাকা চারজনের_ যথাক্রমে আল্লাহ, রাসূল (সা), ভন্ডপীর দেওয়ানবাগী এবং তার পীরের
হাতে ছিল। আল্লাহ, দেওয়ানবাগী ও তার পীর প্রথম সারিতে ছিলেন। বাকি সবাই পিছনের সারিতে। আল্লাহ নিজেই স্লোগান দিয়েছিলেন_ ”মোহাম্মাদী ইসলামের আলো_ ঘরে ঘরে জ্বালো।”(সূত্র: সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগী পত্রিকা- ১২/০৩/৯৯ )
৪) ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীর এক চাকর নাম মাওলানা আহমাদুল্লাহ যুক্তিবাদী সে বলে, “আমি স্বপ্নে দেখলাম হযরত ইব্রাহীম
(আ) ণির্মিত মক্কার কাবা ঘর এবং স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা) বাবে রহমতে হাজির হয়েছেন। আমাকে উদ্দেশ্য করে নবী করীম
(সা) বলছেন_”তুমি যে ধারণা করছ যে, শাহ্ দেওয়ানবাগী হজ্জ করেননি আসলে এটা ভুল। আমি স্বয়ং আল্লাহর নবী
মোহাম্মাদ (সা) তার সাথে আছি এবং সর্বক্ষণ থাকি। আর কাবা ঘর ও তার সামনে উপস্থিত আছে। আমার মোহাম্মাদী
ইসলাম শাহ্দেওয়ানবাগী প্রচার করতেছেন। যুক্তি খণ্ডনের প্রয়োজন নেই শুধু আপনাদের উপর বিষয়গুলো ছেড়ে দিলাম । কতো বড় ভণ্ড হলে এরকম বলতে পারে ।

৫) দেওয়ানবাগী পীরের কিছু লোমহর্ষক তথ্য:

“তথাকথিত ছুফী সম্রাট দেওয়ানবাগী পীর জাল দলিলের মাধ্যমে জোর পূর্বক কয়েক কোটি টাকার জমি দখল করে নিয়েছে
বলে অভিযোগ করেছেন জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর। গত কয়েকমাস আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার ছেলে মহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম প্রমুখ। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের পিছনে
১৪২/১ দক্ষিণ কমলাপুরে ৮০ শতাংশ ভূমি ক্রয় করে। জমিটি ক্রয়ের পর থেকেই তথাকথিত ভন্ডপীর দেওয়ানবাগী তার
সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে দখলের পায়তারা করে আসছিল। ভন্ডপীর দেওয়ানবাগীর সন্ত্রাসী বাহিনী গত ২০০২ সালে রাতের
অন্ধকারে বাড়ির ভাড়াটিয়াদের জোর পূর্বক বেরকরে জমিটি দখল করে নেয়। ভূমি অফিসের কিছু অসাধু অফিসারে সাথে অবৈধ লেনদেন করে তিনি কাগজপত্র তৈরি করেন। জমি দখলের বিরুদ্ধে জজ কোর্টে মামলা করলে কোর্ট গত ২০০৩
সালে স্থগিতাদেশ প্রদান করে। উল্লেখ্য যে দেয়ানবাগীও তার সন্ত্রাসীচক্র উক্ত বাড়িতে বর্তমানে উটের খামার করে। এখন নিয়মিত শতাধিক সন্ত্রাসী সেখানে অবস্থান করে। তার সন্ত্রাসী বাহিনী মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য নিয়মিত মোবাইলে হুমকি
দিয়ে আসছে। এ ব্যাপারে মতিঝিল থানায় একাধিক জিডি করা হয়েছে। তিনি আরো অভিযোগ করে বলেন, উক্ত জমির
উপর আদালতের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে সমাধি করা হয়। তার পালিত সন্ত্রাসীদের ভয়ে
কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। তিনি মতিঝিল ও আরামবাগ এলাকায় একাধিক বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। তাই জমি
ফেরত পেতে জমির প্রকৃত মালিক আব্দুল গফুর প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন।” ( দৈনিক সংগ্রাম )
৬) “আমার অসংখ্য মুরিদান স্বপ্ন ও কাশফের মাধ্যমে আল্লাহর দীদার লাভ করেছে। আমার স্ত্রী হামিদা বেগম ও আমার
কন্যা তাহমিনা এ খোদা স্বপ্নের মাধ্যমে আল্লাহকে দাড়ী গোফ বিহীন যুবকের ন্যায় দেখতে পায়।” (নাউযুবিল্লাহ)
সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথেঃ২৩
৭) সাংবাদিক সম্মেলনে সে বলে “শুধু আমি নই, আমার স্ত্রী কন্যা সহ লক্ষ্য লক্ষ্য মুরিদানও আল্লাহকে দেখেছেন” সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ।

ছুফী সম্রাট দেওয়ানবাগী কাফের:

৮) “দেওয়ানবাগে আল্লাহ ও সমস্ত নবী রাসূল, ফেরেস্তারা মিছিল করে এবং আল্লাহ নিজে শ্লোগান দেন।” –সুত্রঃ সাপ্তাহিক দেওয়ানবাগ, মার্চ ১৯৯৯ ইং।
৯) “আমি এক ভিন্নধর্মের লোককে ওজীফা ও আমল বাতলে দিলাম। কদিন পর ঐ বিধর্মী স্বপ্নযোগে মদিনায় গেল।
নবিজীর হাতে হাত মিলালো। নিজের সর্বাঙ্গে জিকির অনুভব করতে লাগলো। তারপর থেকে ওই বিধর্মী প্রত্যেক কাজেই
অন্তরে আল্লাহর নির্দেশ পেয়ে থাকে।” সুত্রঃ মানতের নির্দেশিকাঃ২৩, সূফী ফাউন্ডেশন, ১৪৭ আরামবাগ, ঢাকা।
১০) “কোন লোক যখন নফসীর মাকামে গিয়ে পৌঁছে, তখন তাঁর আর কোন ইবাদাত লাগেনা।” –আল্লাহ কোন পথে,পৃঃ ৯০
১১) “জিব্রাইল বলতে আর কেও নন, স্বয়ং আল্লাহ-ই জিব্রাইল।”–সুত্রঃ মাসিক আত্মার বাণী, ৫ম বর্ষ, ১ম সঙ্খ্যাঃ২১
১২) “সূর্যোদয় পর্যন্ত সাহরী খাওয়ার সময়। সুভহে সাদেক অর্থ প্রভাতকাল। হুজুরেরা ঘুমানোর জন্য তাড়াতাড়ি আযান
দিয়ে দেয়। আপনি কিন্তু খাওয়া বন্ধ করবেন না। আযান দিয়েছে নামাজের জন্য। খাবার বন্ধের জন্য আযান দেয়া হয়না।” (নাউযুবিল্লাহ) –সুত্রঃ মাসিকআত্মার বাণী, সংখ্যাঃ নভেম্বরঃ ১৯৯৯, পৃঃ ৯।)
১৩) “মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হায়াতে জিন্দেগী কে পুলসিরাত বলা হয়।” সুত্রঃ আল্লাহ কোন পথে, তৃতীয় সংস্করনঃ৬০
১৪) “ আল্লাহ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে আত্মা এক বিচ্ছেদ যাতনা ভোগ করতে থাকে। প্রভূর পরিচয় নিজের মাঝে না
পাওয়া অবস্থায় মৃত্যু হলে সে বেঈমান হয়ে কবরে যাবে। তখন তাঁর আত্মা এমন এক অবস্থায় আটকে পড়ে যে, পুনরায় আল্লাহর সাথে মিলনের পথ খুঁজে পায়না। আর তা আত্তার জন্য কঠিন যন্ত্রনাদায়ক। আত্মার এরূপ চিরস্থায়ী যন্ত্রনাদায়ক অবস্থাকেই জাহান্নাম বা দোযোখ বলা হয়।”(নাউযুবিল্লাহ) –আল্লাহ কোন পথেঃ ৪৪
১৫) দেওয়ানবাগী নিজেকে ইমাম মাহদী দাবী করেন। অতঃপর দরুদে মাহদী রচনা করেন। দরুদে মাহদীঃ
(নাউযুবিল্লাহ) “আল্লাহুম্মা ছাল্লী আলা সাইয়্যিদিনা মুহাম্মাদিউ ওয়ালা আলি ইমাম মাহদী রাহমাতাল্লিল আলামীন
ওয়ালিহী ওয়াছাল্লীম। ”
ভন্ড দেওয়ানবাগী সম্পর্কে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফতোয়াঃ

ক) দেওয়ানবাগের পীর নিতান্তই গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট। (খ) ধর্মীয় দীক্ষা গ্রহন করাতো দূরের কথা, এর সাহায্য সহযোগিতা
করা, সান্নিধ্যে উঠা-বসা বরং তাঁর সাথে কোন রকম সংশ্রব রাখা হারাম। (গ) আর তাঁর অপপ্রচার প্রতিহত করা প্রত্যেক
মুসলমানের কর্তব্য। (১৭৬৭ ইসঃফাঃ সং ও দাওয়াহ/৩/৮৭/ ৫১২২ তাং ৫/৯/৯১ ইং। )

এতসব ঈমান ধ্বংসাত্মক কথা ও কর্মের মাধ্যমে সে প্রমাণ করলো আসলে সে একজন শয়তান সম্রাট। তার রাজত্বে
কেবল শয়তান ই সৃষ্টি হয়। এত কুকর্মের পরেও বিনা বাধায় তাঁর কাজ সে করে চলেছে। সরকারের পক্ষ থেকে কোন রকম
বাধার সম্মুখীন না হওয়ায় দিন দিন তাঁর অপশক্তি ক্রমবর্ধমান ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটু খোঁজ নিলে এ রকম আরও হাজার হাজার গাজাখুরী মতবাদ শুনতে পারবেন, যা সেয় প্রতিদিন বিনা দ্বিধায় বলে চলেছেন। সকল মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব
এ সকল ফেৎনা সম্পর্কে তাওহীদ বাদী ঈমানদার মুসলমানকে সজাগ ও সতর্ক করা। আল্লাহ্ এইসব ভন্ডদের ভন্ডামী ও
শয়তানী থেকে আমাদের রক্ষা করুন। আমীন।

লেখক: মাওলানা হবিবুর রহমান, প্রতিষ্টাতা মুহতামিম, দারুল উলূম মাদ্রাসাতুল উম্মাহ ফ্রান্স।