মুসলিম জীবনের আনন্দ উৎসব আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণ ও অশ্লীলতায় নিহিত নয়; বরং তা নিহিত আছে আল্লাহর দেওয়া
আদেশ পালন করার মাঝে। কেননা মুসলমানের ভোগবিলাসের স্থান ক্ষণস্থায়ী পৃথিবী নয়; বরং চিরস্থায়ী জান্নাত। তাই
মুসলিম জীবনের প্রতিটি কাজে জড়িয়ে থাকবে তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের ঈমান, আখেরাতের প্রতি তাদের অবিচল বিশ্বাস, আল্লাহর প্রতি ভয় ও ভালোবাসা। রবি শশির চক্রানুক্রমে দিন যায়, রাত আসে। সপ্তাহ যায়, মাস আসে। মাস যায়,
নতুন বছর শুরু হয়। এভাবে ঘোরাফেরার দিনাতিপাতে আমাদের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে। এই যে, দিনরাতের পর সপ্তাহ, সপ্তাহের পর মাস, মাসের পর বছর, এগুলো কার ঈশারায় হয়? নিশ্চয়ই এর একজন কারিগর আছেন! কে তিনি? তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, লালনকর্তা আল্লাহ তাআলা। আল্লাহপাক ইরশাদ করেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট
একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে ইসলাম’। বাংলাদেশের ৯৫ ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী। তাই এ দেশের সংবিধানে
উল্লেখ রয়েছে আমাদের রাষ্ট্রধর্ম “ইসলাম’’। কথা হচ্ছে ইসলামে কোনপ্রকার কুকালচার বা বিজাতীয় কৃষ্টি কিংবা
অপসংস্কৃতি উদযাপনের অনুমোদন আছে কি? ইসলামের কথা না হয় পরে বলি, সচেতন বাঙালিদের বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রাখছি- থার্টি ফার্স্ট নাইট কি আমাদের বাঙালি সংস্কৃতিতে আছে? যদি না থাকে তবে কেন ৩০ লাখ শহীদের পবিত্র
খুনে রঙিত সবুজ এই জমিনে থার্টি ফার্স্ট এবং নববর্ষের নামে নষ্টামির নির্লজ্জ প্রদর্শনীর আয়োজন? আমাদের তো স্বকীয়
সন আছে, বাংলা ক্যালেন্ডার আছে, তবে কেন সেই ব্রিটিশদের ইংরেজি সন নিয়ে এতো মাতামাতি? থার্টিনষ্টিসহ ইসলাম
বিরোধী কোন কাজ ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশে ডাকঢোল পিটিয়ে হতে পারে কি? আমাদের ক্ষমতাসীন সরকার প্রধান
তো তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন, হজব্রত পালন করেন, সংগত কারণেই বলতে হচ্ছে, তিনি একজন ধার্মিক দেশকর্তা হিসেবে সরকারিভাবে থার্টি ফাস্ট নাইট এবং অপসংস্কৃতিসহ সকল ইসলামবিরোধী কাজ বন্ধ করে দেয়া উচিত নয় কি? পাশাপাশি মুসলিম গরিষ্ট দেশ হিসেবে থার্টি ফার্স্ট নাইটের ন্যায় বেহায়াপনা ও ইসলামবিরোধী কাজগুলো থেকে সরকারকর্তৃক মুসলমানদের বিরত রাখা দায়িত্বের দাবিদার নয় কি?
থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনের প্রেক্ষাপট:
এখানে ইসলামের নির্দেশনা বর্ণনার আগে ইতিহাসের আলোকে বিভিন্ন জাতির সূত্রানুযায়ী ইংরেজি নববর্ষ এবং ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’ কালচারের শেকড়ের কথা উদ্ধৃতির দাবি রাখে। ঈসা (আঃ) এর জন্মের ৪৬ বছর আগে রোমান মুশরিকরা Janus
নামে এক ঈশ্বরের ইবাদত করত যাকে তারা God of beginnings বা শুরুর স্রষ্টা রুপে জানত। মূলত তারা অনেক জন সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী ছিল, তার মধ্যে Janus ছিল অন্যতম। তাদের বিশ্বাস ছিল Janus অতীত ভবিষ্যৎ এর সব কিছুই জানে
ও ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রনে ক্ষমতা রাখে। এই Janus এর নাম অনুসারে বছরের প্রথম মাসের নাম দেয়া হয় January। এই মাস
চলে আসলে তারা সেলিব্রেট করে তাদের ঈশ্বর Janus কে খুশি করে, যেন Janus তাদের বছরটি মঙ্গলের মধ্যে রাখে।
আপনারা যদি Janus এর মূর্তির ছবি দেখেন তাহলে দেখবেন এর দুইটা মাথা। দুপাশে দুইটা মাথা দ্বারা নির্দেশ করে এটি
সামনে পিছনে সব দিকেই দেখতে পায় প্রতীকীভাবে বোঝানো হয় এটি অতীত ভবিষ্যৎ সবই দেখতে পায়।
এই বিশ্রী শিরকী আকীদায় কোন মুসলিমই সমর্থন দিতে পারেনা। আসলে সকল দিনই আল্লাহর। শুধুমাত্র আল্লাহ্ই
জানেন ভবিষ্যতে কি ঘটবে। না জেনে অনেকেই এই থার্টি ফার্স্ট নাইটের নোংরামিতে মেতে থাকে। তারা চিন্তাও করে
দেখে না সকল দিনই তো আল্লাহর নির্দেশে শুরু হয়, তাহলে এই একটি দিনে কি আছে যে সেলিব্রেট করতে হবে?
থার্টিফার্স্ট নাইট এর ইতিহাস:
সাধারণভাবে প্রাচীন পারস্যের সম্রাট জমশীদ খ্রিস্টপূর্ব ৮০০ সালে এই নববর্ষ বা নওরোজের প্রবর্তন করেছিলেন। এ ধারাবাহিকতা এখনো পারস্যে আছে, এবং ইরানে নওরোজ (থার্টি ফার্স্ট নাইট) ঐতিহ্যগত নববর্ষের জাতীয় উৎসব হিসেবে পালিত হয়। ইরানে থার্টি ফার্স্ট নাইট বা নওরোজ শুরু হয় পুরনো বছরের শেষ বুধবার এবং উৎসব চলতে থাকে নতুন
বছরের ১৩ তারিখ পর্যন্ত। ইরান হতেই ইহা একটি সাধারণ সংস্কৃতির ধারা মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মুসলিম দেশ এবং ভারত উপমহাদেশে প্রবেশ করে। পহেলা জানুয়ারি পাকাপোক্তভাবে নববর্ষের দিন হিসেবে নির্দিষ্ট হয় ১৫৮২ সালে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তনের পর। ধীরে ধীরে শুধু ইউরোপে নয় সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী নববর্ষ
পালন করা হচ্ছে। বাদশাহ আকবরের ফরমান অনুযায়ী আমীর ফতেহ উল্লাহ্ শিরাজী উদ্ভাবিত বাংলা ফসলি সাল চালু হয়
১০ মার্চ ১৫৬৩ সালে। ইংরেজ আমলে গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসরণ করা হলেও রাজস্ব আদায়ে ও অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যে বাংলা সাল তথা ফসলী সন বেশি ব্যবহার করা হতো। বর্ষবরণের সাথে ধর্মীয় অনুভূতির যোগ শুরু থেকেই ছিল বা বর্ষবরণকারীরা ধর্মীয় বিশ্বাসের আলোকেই তা করত। তবে, সেটা আল্লাহ প্রদত্ত কোন নবী-রাসূল আনিত ইসলামে অনুমোদিত হয়নি! মুসলিম সংস্কৃতির মধ্যে প্রবেশ করতে পারেনি। মজুসী বা অগ্নি উপাসকরা এখনো বর্ষবরণকে সরকারি ছত্রছায়ায়
ব্যাপক জাঁকজমকভাবে পালন করে থাকে। একে তারা তাদের ধর্মীয় অনুষঙ্গ মনে করে এবং একে নওরোজ বা নতুন দিন
বলে অভিহিত করে। ফসলী সনের নববর্ষ হিন্দুদের খাছ ধর্মীয় উৎসবের দিন। এর আগের দিন তাদের চৈত্র সংক্রান্তি, আর
পহেলা বৈশাখ হলো ঘট পূজার দিন। (সূত্র- থার্টি ফাস্ট নাইট : একটু ভাবুন! (গ্রন্থ) সবুজ বাংলা ও সামহিয়্যারইন (ব্লগ)
৩১ ডিসেম্বর দিবাগত রাতকে থার্টিফার্স্ট নাইট বলা হয়:
বর্ষবরণের নামে এ রাতকে ঘিরে পশ্চিমাদের যে কত আয়োজন তার কোনো শেষ নেই। অথচ আশ্চর্যের বিষয় হল, আজ মুসলমানরাও এ আয়োজনে পিছিয়ে নেই। আতশবাজি, পটকাবাজি, গান, বেহায়াপনা, অশ্লীলতা, মাদক সেবন, নারীর শ্লীলতাহানী, যেনা- ব্যভিচারসহ কত কিছুইনা হচ্ছে এ রাতে। এ সব কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্য নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করলে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের অনুসরণ ছাড়া অন্য কিছু খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে থার্টি ফার্স্ট নাইটে অসামাজিক কার্যকলাপ
বহুগুণে বেড়ে যায়। নেশাদ্রব্য, আপত্তিকর নাচ-গানসহ বিভিন্ন বেহায়ামিপূর্ণ কীর্তিকলাপ দ্বারা থার্টি ফার্স্ট উদযাপন গত
কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে চলে আসছে। একটু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, কয়েক দশক আগেও এ দিবসটি এভাবে
উদযাপন করা হতো না। কিন্তু ভিনদেশের সংস্কৃতিতে আজ এ দিবসগুলোতে শরীয়ত বিরোধী ও গোনাহের কাজে লিপ্ত
হয়ে ঈমানদাররা তাদের ঈমান-আমলকে বিনষ্ট করছেন। মূলত এটা খৃস্টানদের সংস্কৃতি হলেও প্রতি বছর অনেক
মুসলিমও পালন করে থাকেন। কিন্তু এটা করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় উচ্ছৃঙ্খল হয়ে পড়ি, শরীয়তের সীমালঙ্ঘন
করে ফেলি। অশ্লীলতা ও নোংরামীতে লিপ্ত হয়ে পড়ি। এটা মুসলমানদের কোন সভ্যতা, সংস্কৃতি হতে পারে না। বরং এটা
একটি অপসংস্কৃতি। থার্টি ফার্স্ট নাইট বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুসরণ এবং অশ্লীলতার মহাপ্লাবন। এটি সম্পূর্ণ বিজাতীয়
সংস্কৃতি। একজন ঈমানদার মুসলমান ও রুচিশীল-সচেতন মানুষ কিভাবে বিজাতীয় সংস্কৃতি ও বেহায়াপনাকে সমর্থন
করে তা বোধগম্য নয়। আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাক যা কাফেরদের জন্য প্রস্তুত
করে রাখা হয়েছে। (সুরা আলে-ইমরান: ১৩১)
থার্টিফার্স্ট নাইট পালন কি ইসলাম সমর্থিত?
এবার দেখা যাক ইসলামের নির্দেশনা এং ইতিহাস পর্যালোচনায় বিশ্বখ্যাত ইসলামিক স্কলাদের অভিমত। ইমাম আবু
হাফস কবীর রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, নওরোজ বা নববর্ষ উপলক্ষে যদি কেউ একটা ডিমও দান করে, তাহলে ঐ মুসলমানের ৫০ বছরের আমল বরবাদ হয়ে যাবে। অর্থাৎ নওরোজ বা নববর্ষ পালনের কারণে তার জিন্দেগির সমস্ত
আমল বরবাদ হয়ে যাতে পারে। আজকে অনেক মুসলমান থার্টি ফার্স্ট নাইট পালন করছে। ইংরেজি নববর্ষ, ফসলী সনের নববর্ষসহ বিভিন্ন নববর্ষ পালন করছে। আর এতে করে তারা বিজাতি ও বিধর্মীদের সাথেই সম্পর্ক রাখছে। তাদেরই অনুসরণ অনুকরণ করছে। পবিত্র কোরআন শরিফে ইরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয়ই সমস্ত প্রাণীর মাঝে আল্লাহপাকের নিকট কাফিররাই নিকৃষ্ট, যারা ঈমান আনেনি।” (সূরা আনফাল : আয়াত শরীফ ৫৫) আর নববর্ষ পালনের দ্বারা সে কাফিরদেরই অনুসরণ-অনুকরণ করা হয়। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রযিঃ থেকে বর্ণিত। বিশ্বনবী সা. বলেন, যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে সম্পর্ক রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।” (সুনানে আহমদ, সুনানে আবূ দাউদ) ইতিহাস এটাই প্রমাণ করে যে, নববর্ষ পালনের প্রবর্তক বিধর্মীরাই। তাই ইসলাম নববর্ষ পালনকে
কখনোই স্বীকৃতি দেয় না।

অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা: এ রাত্রিকে কেন্দ্র করে চলে অশালীন ও বেহায়াপনার মহোৎসব। যুবতীরা আঁটসাঁট, অশালীন ও
অর্ধ নগ্ন পোশাক পরিধান করে অবাধে চলাফেরা করে। অথচ এ প্রসঙ্গে নবী (সা.) বলেন, ওইসব নারী যারা হবে পোষাক পরিহিতা কিন্তু প্রায় নগ্ন। যারা পরপুরুষকে আকৃষ্ট করবে এবং নিজেরাও আকৃষ্ট হবে। তাদের মাথা বক্র উঁচু কাঁধ বিশিষ্ট
উটের ন্যায়। তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এমনকি জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না। (সহিহ মুসলিম: ২১২৮)
বিজাতীয় সাদৃশ্য: থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপন সম্পূর্ণরূপে বিজাতীয় সংস্কৃতি। এ রাত্রিতে বলে ও ম্যাসেজের মাধ্যমে অভিবাদন জানানো, আতশবাজি, পটকাবাজি, ফ্যাশন শো, ফায়ার প্লে, ট্যাটো বা উল্কা অংকন, ডিজে পার্টি ও কনসার্ট, নেশা সেবনসহ বিজাতীয় সংস্কৃতির সাথে সাদৃশ্য রাখে। ইসলাম এটি কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো সম্প্রদায়ের সাদৃশ্য অবলম্বন করলো সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। (আহমদ, আবু দাউদ-৩৫১২, মিশকাতঃ ৪৩৪৭)
থার্টিফার্স্ট নাইট যুব ও নারী সমাজকে ধ্বংস করার নীল নকশা:
যুব সমাজকে ধ্বংস ও নারী সমাজকে নষ্ট করার জন্যই থার্টি ফার্স্ট নাইট বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। ২০০০ সালের
৩১ শে ২৫ মিনিটে গুলশানে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনকারী এক তরুণীকে কিছু মাতাল যুবক শ্লীলতাহানি করে ও তার
শরীরের বেশীর ভাগ কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। আর ২০০১ সালের শাওন আখতার বাধনের ক্ষত-বিক্ষত দেহ কে না দেখেছেন? আরও কত বাধন। এ থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় থার্টি ফার্স্ট নাইট একটি যৌন উৎসব। যা তাদের জন্য অসম্মান জনক। অথচ,
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর তোমরা যেনার নিকটবর্তী হয়ো না। (সুরা বনী-ইসরাইল: ৩২) অন্যত্র আছে, (হে নবী!) আপনি (মুমিনদের) বলে দিন: আমার পালনকর্তা সব ধরনের অশ্লীল বিষয়গুলো হারাম করেছেন। (সুরা আরাফ ৩৩)
ইসলাম হচ্ছে আল্লাহপাকের তরফ থেকে তাঁর প্রিয় হাবীব সা. এর মাধ্যমে তথা ওহীর মাধ্যমে নাজিলকৃত, একমাত্র পরিপূর্ণ, সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত, নিয়ামতপূর্ণ, অপরিবর্তনীয় এবং মনোনীত দ্বীন। মানুষের মুক্তি ও হেদায়াতের জীবন ব্যবস্থা। যা কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সে প্রসঙ্গে আল্লাহপাক পবিত্র আল কোরআনে সূরা আল ইমরানের ১৯ নম্বর আয়াতে বলেন-“নিশ্চয় ইসলামই আল্লাহপাকের কাছে একমাত্র মনোনীত দ্বীন”। মহান আল্লাহ আল কোরআনে সূরা মায়িদার ৩ নম্বর আয়াতে
আরো ইরশাদ করেন, “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে (ইসলামকে) পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত
সমূহ সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং আমি তোমাদের দ্বীন ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম।” রব্বে কারীম দ্বীন ইসলামকে শুধুমাত্র পরিপূর্ণ সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত ও নিয়ামতপূর্ণ করেই নাজিল করেননি! সাথে সাথে দ্বীন ইসলামকে তাঁর মনোনীত ও ঘোষণা করেছেন।
তাই দ্বীন ইসলাম ব্যতীত অন্য সমস্ত ধর্ম যা ওহীদ্বারা নাজিল করা হয়েছিল যেমন, তাওরাত, যাবূর, ইনজীল ও ১০০ খানা
ছহীফা এবং মানব রচিত মতবাদ যা পূর্বে ছিল ও বর্তমানে যা রয়েছে এবং ভবিষ্যতে যা হবে সেগুলোকে তিনি বাতিল
ঘোষণা করেছেন।
এ সম্পর্কে দেশের সংবিধানে কি আছে:
বাঙালি মুসলমানদের জন্য বাংলাদেশের সংবিধানের একটি ধারা শোনানুর যৌক্তিকতা মনে করছি। সংবিধানের ৩ নম্বর
ধারায় বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা। সে প্রেক্ষিতে দেশে ইংরেজি ভাষাসহ বিভিন্ন উপজাতীয় ভাষার ঊর্ধ্বে
যেমন রাষ্ট্রভাষা বাংলার মর্যাদা ও প্রাধান্য তেমনি সংবিধানের ২ নম্বর ধারায় বর্ণিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের কথা স্বীকারের
প্রেক্ষিতে অন্যান্য ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীর উপরে ইসলাম ও মুসলমানের মর্যাদা ও প্রাধান্য স্বীকৃত হওয়া আবশ্যকের দাবিদার।
তাই, থার্টি ফার্স্ট নাইটের মতো অসাংবিধানিক সাস্কৃতিক আগ্রাসন রোধে কার্যকরী ভূমিকা প্রণিধানযোগ্য। আবেগী আর
হুজুগি মুসলিম বাঙালি ভাই-বোনেরা আসুন! এসব ঈমান বিধ্বংসী অপসংস্কৃতি পরিত্যাগ করি, এগিয়ে আসুন, সচেতনরা ভূমিকা রাখুন। পাশাপাশি ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অনেক বেশি হওয়া কর্তব্য মনে করি।
যা মূলত আমাদের প্রচলিত সংবিধানেরই ব্যখ্যা।
আমাদের আহবান: পরিশেষে সকলকের প্রতি আহবান জানাচ্ছি যে, জেনা, মদ্যপান ও অমুসলিমদেরকে বন্ধু হিসেবে
গ্রহণের এই নিকৃষ্ট সংস্কৃতিকে চিরদিনের জন্য বাংলাদেশ থেকে বিলীন করা চাই। এ লক্ষ্যে সকল মুসলিমকে সীসা ঢালা প্রাচীরের মত অবস্থা তৈরী করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা ও অন্যদেরকে এই বিষয়ে সচেতন করার মাধ্যমে জান্নাত
লাভ করার জন্য আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আল্লাহতায়ালা বলেন, তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে ও পরিবার
পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করো। (সুরা আত-তাহরীম: ৬)