চাষাবাদ এর গুরুত্ব :

চাষাবাদ এর গুরুত্ব :

মানুষের জীবিকানির্বাহে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। জীবনে বেঁচে থাকার জন্য
আমাদের চাষাবাদ করতে হয়। আর যত পেশা আছে, এর মধ্যে চাষাবাদ অন্যতম।
এর মধ্যে আছে মহান আল্লাহর নিদর্শন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,
‘তোমরা যে বীজ বপন করো, সে সম্পর্কে ভেবে দেখেছ কি? তোমরা তাকে উৎপন্ন
করো, না আমি উৎপন্নকারী? আমি ইচ্ছা করলে তা খড়কুটায় পরিণত করে দিতে
পারি, ফলে তোমরা হতবুদ্ধি হয়ে পড়বে।’ (ওয়াকিয়া : ৬৩-৬৫)

বর্গাচাষের বিধান ও শর্তাবলি চাষাবাদ করা বৈধ

যারা বর্গা চাষাবাদ কে জায়েজ বলেন,
তাদের মতে বর্গাচাষের বিশুদ্ধতার জন্য নিম্নোক্ত শর্ত রয়েছে—
 এক. জমি চাষাবাদোপযোগী হওয়া। যদি জমি অনুর্বর হয় কিংবা এত নোনা যে
সেখানে ফসল ফলানো সম্ভব নয়, তাহলে সে  চাষাবাদ এর  ক্ষেত্রে বর্গা চুক্তি শুদ্ধ

হবে না।    কেননা এর দ্বারা উদ্দেশ্য হাসিল হবে না।

দুই. ভূমি মালিক এবং চাষি উভয়ই চাষাবাদ চুক্তি সম্পাদন করার যোগ্য

হতে হবে।

সুতরাং পাগল, জ্ঞানহীন ও অবুঝ শিশুর সঙ্গে চুক্তি শুদ্ধ হবে না। এ শর্তটি বর্গাচাষের    সঙ্গে খাস নয়, যেকোনো চুক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেননা চুক্তি বিষয়টি সম্পাদনকারী  যোগ্য না হলে কোনো চুক্তিই সহিহ হবে না।

তিন. বর্গা চাষাবাদ এর সময়সীমা উল্লেখ থাকতে হবে।কেননা এটি ভূমির মুনাফা          অথবা চাষির মুনাফার ওপর একটি চুক্তি। আর সময়সীমা হলো সেই মুনাফার         মাপকাঠি, যার দ্বারা নির্ধারিত মুনাফা সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়।

চার. চাষাবাদ এর  জন্য  বীজ কে দেবে তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

বীজ কী হবে। তা কোন জাতের হবে। তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। কারণ             বীজের নানাবিধ প্রকার রয়েছে। নিম্নমানের বীজের ফসল একরম আর উন্নত              বীজের ফসল ভিন্ন হবে তা অনুমেয়। সে জন্য পূর্ব থেকেই তা উভয়ের মধ্যে                    স্পষ্ট হতে হবে, যাতে পরবর্ততী সময়ে কোনোরূপ ঝগড়া না হয়।

পাঁচ. যার পক্ষ থেকে  বীজ সরবরাহ করা হবে না, তার অংশ কী পরিমাণ হবে,

তা স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে হবে। কেননা সে তো শর্তের কারণেই তার অংশের হকদার     হয়ে থাকে। তাই তার অংশটি জানা থাকা আবশ্যক।

ছয়. চাষির জন্য ভূমি মালিক কর্তৃক ভূমি সম্পূর্ণরূপে অবমুক্ত করে দেওয়া।                       তার পক্ষ থেকে কোনোরূপ প্রতিবন্ধকতা না থাকা। সুুতরাং যদি ভূমিতে মালিকের       কর্মের শর্ত আরোপ করা হয়, তাহলে ভূমি অবমুক্ত না হওয়ার কারণে চুক্তি ফাসিদ          হয়ে যাবে।

সাত.  চাষাবাদ র পর উৎপাদিফসলে উভয়ের শরিকানা থাকতে হবে।

এ ক্ষেত্রে কেউ এমন কোনো কাজ করবে না, যাতে তার পরিশ্রমের ফল ভোগ
করতে না পারে। (তথ্যকণিকা : হিদায়া, বাদায়েউস সানায়ী)