গণতন্ত্র কি সফলতার মূল মন্ত্র?

আমরা যদি আখেরাতের প্রসঙ্গ কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিয়ে শুধু মাত্র দুনিয়াবী
দৃষ্টিকোণ থেকেও দেখি, তারপরও বলতে হবে, গণতন্ত্র একটি ব্যর্থ সমাজ ব্যবস্থা।
এর দ্বারা কোন রাষ্ট্র চলতে পারে না। যে সমাজ ব্যবস্থায় একজন সর্বোচ্চ জ্ঞানী ও
একজন রিক্সাচালকের মতামত সমপর্যায়ের মনে করা হয়, তার দ্বারা কোন দেশ তো
দূরের কথা, সাধারণ একটি প্রাইমারী স্কুলও চলতে পারে না। স্কুলের হেডমাস্টার কে
হবেন? সেকেন্ড মাস্টার কে হবেন? এ জন্য কিন্তু এলাকার লোকদের ভোট নেয়া হয় না। বরং এক্ষেত্রে যদি ভোটের কথা বলা হয় তাহলে বলা হয়, মূর্খ লোকেরা এর কি বুঝবে?
এ জন্য তো জ্ঞানী-গুণী ও শিক্ষিত লোকদের কমিটি দরকার। তাহলে দেখুন, যে ব্যবস্থা
দ্বারা স্কুলের একজন হেডমাস্টার ও প্রিন্সিপ্যাল নিযুক্ত করা যায় না, তার দ্বারা একজন রাষ্ট্রপ্রধান ও নীতিনির্ধারক কীভাবে নির্বাচিত হতে পারে? একটি দেশ কি একটি প্রাইমারী স্কুল থেকেও কম গুরুত্ব রাখে?

সারকথা হচ্ছে বর্তমান পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলমান বুঝে কিংবা না বুঝে, ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় ইসলামের চির দুশমন ইয়াহুদী-খ্রিস্টানদের তৈরি গণতন্ত্র নামক ধর্মের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে মুসলমানের অমূল্য সম্পদ
ঈমানকে রক্ষা করার জন্য আমাদের কর্তব্য হলো, মনে-প্রাণে এই গণতন্ত্রকে ভুল মনে করতে হবে। এর কুরআন বিরোধী ধারাগুলোকে সরাসরি কুফর জ্ঞান করতে হবে এবং সাধ্যানুযায়ী দীনী দা’ওয়াত ও তা’লীমের জন্য সময় বের করে মানুষের মাঝে ঈমান
আমল পরিশুদ্ধ করার জন্য ব্যাপক মেহনত চালাতে হবে। এটিই সে পদ্ধতি, যার
মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা এই সব কুফরীতন্ত্রের জোয়াল আমাদের কাঁধ থেকে নামিয়ে
দিয়ে সাচ্চা মুসলমান বানাবেন এবং তামাম কুফর-শিরক ও বিদ‘আত থেকে আমাদের হেফাযত করবেন; ইনশা-আল্লাহ।

গণতন্ত্র সম্পর্ক একটি প্রশ্নের জবাব:

 কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, গণতন্ত্র কুফরীতন্ত্র হয়ে থাকলে আমাদের আকাবিরে দেওবন্দ কেন এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছিলেন? এর উত্তরে আমি বলব, গণতন্ত্রকে
মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা আর বাতিলের ভাষা হিসাবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ব্যবহার করা
এক কথা নয়। কারণ তারা গণতন্ত্রের হরতাল, লংমার্চ ইত্যাদির প্রভাব বোঝে এবং
এটাকে ভয় পায়। কিন্তু আমাদের আকাবিরগণ গণতন্ত্রকে সর্বদা কুফরীতন্ত্র হিসাবেই
বিশ্বাস করতেন। তবে বিভিন্ন সময় দীন-ইসলামকে রক্ষার স্বার্থে বাতিলের ভাষা হিসাবে তাঁরা সাময়িকভাবে এ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন এবং উম্মতের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম তৈরি
করে বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে বাতিলের মুকাবেলা করেছেন।

উল্লেখ্য, যতদিন এ মুসীবত দূর না হবে, ততদিন একান্ত ঠেকায় পড়ে, বড় অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য তুলনামূলক ভালো লোককে ভোট দিতে চাইলে দেয়ার অবকাশ রয়েছে।
তবে আন্তরিকভাবে কখনোই এ মতবাদকে বৈধ মনে করা যাবে না।
ঈমানকে হেফাযতের লক্ষ্যে কথাগুলো নিজে বুঝবো এবং অপরকে বোঝাবো।
সেই সাথে লোকদের ঈমান-আমল পরিশুদ্ধ করার জন্য যার যার কর্মক্ষেত্রে যথাসাধ্য
চেষ্টা করার পাশাপাশি আল্লাহর দরবারে নিয়মিত দু‘আ করতে থাকবো। আল্লাহ পাক আমাদেরকে সহীহ ঈমান ও হেদায়াতের উপর কায়েম থাকার তাউফীক দান করেন। আমীন।